Sunday, December 2, 2012

পরীক্ষা না দিয়ে শ্বশুরবাড়ি


প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা চলছিল পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হালিমার (১১)। দুটি পরীক্ষা দেওয়া হয়েছিল। বাকি ছিল আরও চারটি। কিন্তু বাকি পরীক্ষা আর দেওয়া হলো না হালিমার। বিয়ে কী, তা বোঝার আগেই ১১ বছরের শিশুটিকে বসতে হলো বিয়ের পিঁড়িতে। পরীক্ষা না দিয়েই যেতে হলো শ্বশুরবাড়ি।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা চলাকালে গত ২৫ নভেম্বর বিয়ে দেওয়া হয় হালিমাকে। বিয়ের পরে চলে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি। বাকি পরীক্ষাগুলো না দিয়েই গতকাল শনিবার শ্বশুরবাড়ি যায় সে। হালিমা বগিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার তালতলী (নবগঠিত) উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চন্দনতলা গ্রামে। সেখানকার স্থানীয়রা হালিমার বাল্যবিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বর-কনের অভিভাবকেরা অনড় থাকায় বিয়ে বন্ধ করতে পারেননি তাঁরা।
বগিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা বিয়ে আটকানোর জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের শরণাপন্ন হয়েছিলাম, কিন্তু তিনি কোনো ভূমিকা নেননি।’ তবে পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজির হোসেন কালু পাটোয়ারী দাবি করেন, এ বিয়ে সম্পর্কে কিছুই জানেন না তিনি।
হালিমার বাবা হারুন গাজী বলেন, ‘পাশের গ্রামের সিদ্দিক সিকদারের অনুরোধ রক্ষা করতে তাঁর ছেলে আউয়ালের (১৬) সঙ্গে গত ২৫ নভেম্বর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি।’ গতকাল বিকেলে মেয়ে শ্বশুরবাড়ি গেছে বলে জানান তিনি। 
এ ব্যাপারে আমতলী উপজেলার বিবাহ নিবন্ধক (কাজি) সমিতির সভাপতি এ জেড এম সালেহ বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিবাহ নিবন্ধনের প্রশ্নই আসে না। কোনো মৌলভি বাল্যবিয়ে দিলে আইনের আওতায় তিনি অপরাধী হবেন বলে জানান তিনি।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, ‘বাল্যবিয়ের ঘটনাটি আমার জানা নেই। ঘটনা সত্য হলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

No comments:

Post a Comment