Tuesday, March 5, 2013

কিছু শিক্ষকের ছায়ায় জঙ্গি হচ্ছেন নর্থ সাউথের ছাত্ররা |

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধর্মীয় উগ্র মতবাদ ছড়ানো ও তাঁদের ‘জঙ্গিবাদ’-এ উদ্বুদ্ধ করার গোপন তৎপরতায় প্রতিষ্ঠানটির কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগ পেয়েছে কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ব্লগার রাজীব হত্যায় জড়িত হিসেবে পাঁচজন ছাত্র গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ জঙ্গিবাদবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। 
জানতে চাইলে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মো. আবদুস সাত্তারও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, একশ্রেণীর শিক্ষক ও কর্মকর্তা কতিপয় শিক্ষার্থীকে জঙ্গিবাদে জড়াতে ‘মগজধোলাই’ করছেন। এ জন্য বিশেষ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এঁদের শনাক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন হলে গোয়েন্দা পুলিশেরও (ডিবি) সহযোগিতা নেওয়া হবে। 
দেশের প্রথম বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরেরও তৎপরতা রয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে খবর রয়েছে। হিযবুত তাহ্রীরের কর্মী হিসেবে বিভিন্ন সময়ে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ কেউ গ্রেপ্তারও হন। গত বছর নাশকতা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হওয়া নাফিসও একসময় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন।
পাঁচ ছাত্র বহিষ্কার: এদিকে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যায় গ্রেপ্তার হওয়া নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাঁচ ছাত্র ফয়সাল বিন নাইম (দীপ), মাকসুদল হাসান (অনিক), এহসান রেজা (রুম্মান), নাঈম শিকদার (ইরাদ)ও নাফিস ইমতিয়াজকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শৃঙ্খলা কমিটির জরুরি সভায় এঁদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। 
এই পাঁচ ছাত্র রাজীব হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। গতকাল রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনেও তাঁরা খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত-তদারক কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাজীব হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শিবিরের সাবেক নেতা কথিত ‘বড় ভাইকে’ ধরার চেষ্টা চলছে। তাঁকে গ্রেপ্তার করা গেলে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
সেই যুবকই চাপাতি কেনেন: গ্রেপ্তার হওয়া মাকসুদুল হাসান প্রথম দিনই ডিবির কর্মকর্তাদের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনিই রাজীবকে হত্যার জন্য চাপাতি ও ছুরি কিনেছিলেন। তাঁর দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী, গতকাল বিকেলে বাড্ডার নতুন বাজারের ওই দোকানে গেলে দোকানমালিক প্রথম আলোকে বলেন, কিছুদিন আগে এক যুবক তাঁর দোকানে গিয়ে রেস্তোরাঁর জন্য চাপাতি ও ছুরি লাগবে বলে জানান। এরপর ওই যুবক তাঁর কাছ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকায় দুটি চাপাতি ও চারটি ছুরি কেনেন। সম্প্রতি তিনি টেলিভিশনে দেখেন, ওই যুবকই রাজীব হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। 
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবীর পলাশনগরের বাসার সামনে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে ব্লগার রাজীবকে হত্যা করা হয়।

No comments:

Post a Comment