Tuesday, April 30, 2013

সিঙ্গাপুর নেয়া হচ্ছে উদ্ধারকর্মী এজাজকে


সাভারের উদ্ধার অভিযানে অগ্নিদগ্ধ স্বেচ্ছাসেবক উদ্ধারকর্মী এজাজ উদ্দিন কায়কোবাদের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার সরকার বহন করবে।
সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে গার্মেন্টকর্মী শাহীনা আক্তারকে উদ্ধার করতে গিয়ে মারাত্মক অগ্নিদগ্ধ এজাজকে মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে দেখতে গিয়ে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বেচ্ছাসেবক উদ্ধারকর্মী এজাজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানো হচ্ছে।
রোববার রাতে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের উপর থেকে সুরঙ্গ কেটে নেমে শাহীনাকে উদ্ধারের সময় আগুন লাগলে অগ্নিদগ্ধ হন এজাজ। পরের দিন শাহীনা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এজাজকে সিঙ্গাপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়ার খরচ হিসাবে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ৩৫ লাখ টাকা দেন।
এছাড়া সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত আরও চারজনের চিকিৎসারও খোঁজ-খবর নেন প্রধানমন্ত্রী।

বলিউডি দাম্পত্যের গোপন কথা


অফিসের কাজের ফাঁকে উষ্ণ কফিতে সিপ মারতে মারতেই হোক বা সুক্তোয় রাঁধুনি ফোড়ন দিতে দিতে, বাঙালি মনের আনাচে-কানাচে সবসময়ই যেন ঘুরতে থাকে সেলেবদের রোজনামচা আর টক-ঝাল গসিপ! সুযোগ পেলেই বাঙালি হৃদয় ঘাঁটতে থাকে প্রিয় তারকাদের হরেক প্রেম ঝগড়া-পরকীয়া; আরও কত কী নিয়ে ফিসফিসানি! এক কথায় মাসিমা, দিদিমা থেকে সদ্য টিন-এজে পা দেওয়া কন্যে- তারকাদের জীবন গাথা, দাম্পত্য, বিরহ নিয়ে একটা ছোটখাট আড্ডা জমাতে সকলেই ওস্তাদ। আর ভারতীয় সিনেমার ১০০ বছর পূর্তিতে সেই গল্পও বেড়েছে বই কমেনি!
 
তবে এবার পরনিন্দা বা তারকাদের খুঁত খোঁজা ছেড়ে একটু ভেবে দেখুন তো ওঁদের প্রেমের কথা; সেলেবদের সম্পর্ক সব সময়েই ঠুনকো হয় না। এমন অনেক সেলেবই আছেন বলিউড জুড়ে, যাঁদের দাম্পত্য আমাদের ভালবাসায় আস্থা ফেরাতে শিখিয়েছে। ওঁরা শিখিয়েছেন কীভাবে পড়তে হয় বার বার একই মানুষের সঙ্গে ছাপুছাপু প্রেমে। ভাল-খারাপ সময়ের তোয়াক্কা না করেও হাতটি একে অপরের কত শক্ত করে ধরে থাকতে হয়, তাও বোধহয় ওঁদের থেকে শিখে নিতে হবে। সেরকমই বলিউডি তারকাদের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া ৫টি জুটির নাম বলব, যাঁরা কঠিন সময়কে হার মানালেও হারাতে দেননি নিজেদের ভালবাসাটিকে।
 
তা, কারা এই সেরা ৫ বলিউডি লাভ বার্ড? কাদের প্রেমলীলাতেই বা অনুপ্রেরিত হবে এই প্রজন্মের ‘শর্ট টাইল’ সম্পর্কে বিশ্বাসী যুগলের দল?
 
শাহরুখ-গৌরী: মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রথম দেখা। সামান্য রোজগারে শুরু হয় দিন চলা। প্রাথমিকভাবে ভিন্ন জাতের কারণে বিবাহে আসে প্রবল বাধা গৌরীর পরিবার থেকে। বিয়ের প্রথমদিকে নাকি স্বামী শাহরুখের ছবি করাতে ছিল গৌরীর ঘোর আপত্তি। দিল্লি ফিরে আসার জন্যে ছবি ভাল না চলুক- এমনটাও নাকি চাইতেন তিনি। নিন্দুকেরা অবশ্য বলে, সে আপত্তি এখনও রয়েছে! নইলে কেন স্বামীর সঙ্গে কাজ করা জনৈক নায়িকার বলিউডে কাজ পাওয়া বন্ধ করে দেবেন গৌরী! যে যাই বলুক, প্রেমে মায়ায় শাহরুখই এখনও তাঁর আঁচলেই বাঁধা।
 
ঐশ্বর্য-অভিষেক: এই জুটির প্রথম ছবি ‘ঢাই অক্ষর প্রেম কে’ তেমন সাফল্য পায়নি! সঙ্গে করা আরও কটা ছবিও বেশ ফ্লপ। কিন্তু বাস্তবে প্রেম দানা বাঁধতে থাকে সবার অগোচরে। ‘বান্টি অউর বাবলি’র সেটে অ্যাশের ‘কজরা রে’ নাচের সময়ই তাঁকে অভি’র ভীষণ ভাল লেগে যায় হঠাৎ! বাকিটুকু তো জানাই; ২০০৭-এ হয় এনগেজমেন্ট এবং সেই নিমন্ত্রণ-বিতর্ক জড়ানো বিয়ে! এখন একটি খুকিও হয়েছে দম্পতির; মনের সুখে দিব্যি আছেন তাঁরা।
 
হৃত্বিক-সুজান : একটি ট্রাফিক সিগন্যালে প্রথম দেখেই নায়ক প্রেমে পড়ে যান সুজানের। তারপর প্রথম ডেটে রেস্তোরাঁর বিল দিয়ে যখন তাঁকে উদ্ধার করেন সুজান; তখন থেকেই নায়কের সব ভাল-মন্দের দায় চলে যায় সুজানের হাতে! ২০০০ সালে গাঁটছড়া হয়ে গিয়েছে বাঁধা, তার পর দুটি ছেলে নিয়ে কর্তা-গিন্নির সংসার এখন সুখের! মাঝে অবশ্য বারবারা মোরি নামের এক বিদেশিনীর সঙ্গে খানিক ঝামেলা বাধিয়েছিলেন কর্তা; গিন্নি সে সমস্যাকে ফের সাগরপারে পাঠিয়ে ফিরিয়ে এনেছেন সংসারে শান্তি। আর কী চাই?
 
স্যাফ-করিনা : ‘তশন’ ছবিটির সেটে সমুদ্র সৈকতে সান-বাথ নিতে দেখে দুম করে নায়কের প্রতি ফিদা হয়ে যান করিনা। সেটেই তারপর চলতে থাকে প্রেম। এক সময় নিয়মমাফিক বিয়েও হল। সেই সদ্য বিবাহের লাড্ডু খেয়ে এখন কি পস্তাচ্ছেন তাঁরা? তা কেন হতে যাবে! বরং এখনই সব কাজ ছেড়ে সংসারে মন দিয়েছেন কন্যে; গৃহকোণের সুখও বজায় আছে ষোল আনা!
 
অক্ষয়-টুইঙ্কল : একসঙ্গে একটি ছবি করতে গিয়ে দুজনের প্রথম প্রেমে পড়া! নানান টালবাহানার পরে বিয়ে! হ্যাঁ, বিয়ের পরেই নাকি অনেকটা শুধরে যান অক্ষয়, আর মন দেন না যে কোনও নায়িকাকে। তাছাড়া ওঁর লাকও নাকি খুলে গিয়েছে সেই বিয়ের পর থেকেই।
 
কী ভাবছেন তাহলে? চারপাশে যখন বিয়ের ভাঙন নিয়ে এত তোলপাড়, তখন এই সেলেবদের সফল দাম্পত্য থেকে শেখার কিছু আছে বইকি!

sahina

text

Monday, April 29, 2013

সিগারেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিপাকে মমতা

স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বেশি করে সিগারেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আজ সোমবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংস্থা গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে স্বল্প অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হন। তাঁর গ্রেপ্তারের পর ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের সাহায্যের জন্য মমতা ২৪ এপ্রিল ৫০০ কোটি রুপির একটি ত্রাণ তহবিল গঠন করার ঘোষণা দেন । 
ওই ঘোষণার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিগারেটের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ওই ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে ১৫০ কোটি আদায়ের ব্যবস্থা করা হবে। এ সময় তিনি বেশি কর আদায়ের জন্য মানুষকে বেশি করে সিগারেট খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তাঁর এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয় পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ। তারা মনে করছে, মমতা এই ঘোষণা দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন।
ওই ঘটনার জের ধরে আজ মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এপিডিআর। ওই অভিযোগে সংস্থাটি জানায়, মমতার উচিত তাঁর কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা। তাই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এপিডিআর।

হাউমাউ করে কাঁদলেন লেফটেন্যান্ট আশরাফ



একজন সেনা কর্মকর্তা যাকে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়েছে নির্ভয়, পেশাদার করে। তাদেরকে আবেগ সাধারণত ছুতেঁ পারে না। অথচ সেই সৈনিকটিও বাচ্চার মতো হাউ-মাউ করে কেঁদে উঠেন যখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করে শেষ মূহুর্তে এসে পোশাক শ্রমিক শাহীনুরকে আর বাঁচাতে পারলেন না।
শাহীনুর বেগমকে বাঁচানোর কথা দিয়েছিলেন সেনা সদস্য লেফটেন্যান্ট আশরাফ। কিন্তু উদ্ধার কাজের শেষ পর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টায় ধ্বংস্তুপের নিচে আগুন ধরে গেলে মারা যান শাহীনুর বেগম। তাকে বাঁচাতে না পেরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ঐ কর্মকর্তা।
ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কংক্রিট চাপা পড়া সত্ত্বেও দেড় বছরের সন্তানকে একটি বার দেখার আশায় দীর্ঘ ৫ দিন বাঁচার লড়াই চালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না শাহীনুররের। উদ্ধার হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তেই আবারও ভাগ্যের পরিহাসের শিকার হতে হলো তাকে।
ধ্বংসস্তূপের ভেতর রোববার সকাল ৯টায় যে চার জন জীবিত মানুষের সন্ধান পাওয়া যায় তাদেরই একজন শাহীনুর। সকালে চারজন জীবিত থাকলেও দুপুর ২টার মধ্যেই তাদের তিনজন নিস্তেজ হয়ে পড়েন।
কিন্তু শাহীনুর হাল ছাড়েননি। দাঁতে দাঁতে কামড়ে মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন তিনি।
সর্বশেষ ৮ জনের উদ্ধারকারী দলের যে সদস্যরা উদ্ধার কাজ শুরু করে তাদের একজন সেনা সদস্য লে. আশরাফ বলেন, "শাহীনুর আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, হ্যান্ডশেকও করেছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, তার দেড় বছরের একটি সন্তান রয়েছে। বেঁচে থাকার কী আকুল আকুতি তা শাহীনুরের সঙ্গে কথা না বললে বোঝানো যাবে না।"
তিনি আরও বলেন, "কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে রড কাটার সময় আগুন লেগে সে আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণে আমরা তাকে উদ্ধার করতে পারিনি। কারণ আমাদের সঙ্গে ছিল অক্সিজেন। আমি নিজেও সে আগুনে আহত হয়েছি। আগুনের তাপ ছিল প্রচণ্ড। আমরা কোনো রকমে সেখান থেকে বেঁচে আসি।"
এমনি অনেক ক্ষেত্রে প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্বেও আটকে পরাদের উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছেন উদ্ধারকারীরা। তাদের চেষ্টার কোন ত্রুটি ছিল না, তারা অনেক ক্ষেত্রেই জীবন বাজি রেখে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছেন। দিনের পর দিন অবিশ্রান্ত কাজ করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আহত হয়েছেন। মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে নিজের সবটুকুই বিলিয়ে দিয়েছেন।
জাতি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের সশ্রদ্ধ সালাম।

Saturday, April 27, 2013

কন্যা সন্তানের মা হচ্ছেন অভিনেত্রী প্রভা


বহুল আলোচিত-সমালোচিত মডেল ও অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা কন্যা সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন। দেড় বছর আগে সকল সমালোচনা উপেক্ষা করে মাহমুদ শান্তর সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন প্রভা। শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি আর স্বামীর সঙ্গে ভালোই কাটছে তার দিন। আবার অভিনয়েও নিয়মিত হয়েছেন। কিন্তু এবার এসেছে নতুন খবর। মা হতে যাচ্ছেন এ তারকা।
 
প্রভার ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি প্রভা আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পেরেছেন তার কন্যা সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রভা বিষয়টি তার কাছের লোক জনের সঙ্গে শেয়ারও করেছেন। এনিয়ে প্রভার মন খারাপ হলেও খুশি শান্ত। কারণ প্রভার কন্যা সন্তান পছন্দ না। আর শান্ত কন্যা সন্তান পছন্দ করেন।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাতির মুখ দেখার জন্য তর সইছে না প্রভার শ্বশুড়-শ্বাশুড়ির। আর তাই ছেলে শান্তকে জানিয়ে দিলো তাদের ইচ্ছার কথা। কথা শুনে শান্তরও এ নিয়ে কোন আপত্তি নেই। আর প্রভাও স্বামী শান্তর কথা অমান্য করতে চাইছেন না। তবে মা হবার জন্য প্রভা আরও কয়েকটা দিন সময় চেয়েছেন শান্তর কাছে।
 
আগামী বছরই শান্তকে সেরা উপহারটা দিতে চাইছেন প্রভা। বরাবরই ‘শান্ত’ স্বভাবের শান্ত স্ত্রীর কথা মেনে নিয়েছেন কোন বাক্য ব্যয় না করে। সবমিলিয়ে আগামী বছরই মা হচ্ছেন প্রভা। তার আগে মিডিয়ায় নিজের অবস্থানটা আরেকটু পাকাপোক্ত করে নিতে চান এ মডেল কন্যা।
 
বর্তমানে সংসারের পাশাপাশি নিয়মিত আবার অভিনয়ও শুরু করেছেন প্রভা। এ তারকা এখন একাধিক নাটকের শ্যুটিং করছেন। এ বছরের শেষের দিকে একটি সিনেমায়ও অভিনয় করার কথা রয়েছে প্রভার।
 
পারিবারিক উদ্যোগে ২০১১ সালের ১৯শে ডিসেম্বর বরিশালের ব্যবসায়ী মাহমুদ শান্তর সঙ্গে বিয়ে হয় প্রভার। শান্ত একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রানার স্ত্রীসহ আটক ৪

সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজা ভবনের মালিক সোহেল রানাকে গ্রেপ্তারে তথ্য জোগাড়ের লক্ষ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর স্ত্রী মিতুসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অন্য তিনজন হলেন রানার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর ও তাঁর স্ত্রী মুন্নি এবং মুন্নির আত্মীয় আনোয়ার। জাহাঙ্গীর দম্পতির সঙ্গে তাঁদের তিন মাসের শিশুপুত্রও রয়েছে। 
জাহাঙ্গীরের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গত বুধবার ভবনধসের পর জাহাঙ্গীর স্ত্রী মুন্নিকে নিয়ে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ঝিটকা এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে যান। গত বৃহস্পতিবার সাভার থানার পুলিশ সেখান থেকে তিন মাসের শিশুসহ মুন্নি ও তাঁর আত্মীয় আনোয়ারকে আটক করে। তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার জাহাঙ্গীরকে আটক করা হয়। মিতুকেও গতকাল আটক করা হয়।
সাভার থানার পুলিশ চারজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে কখন কোত্থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে, এ ব্যাপারে পুলিশ কিছু জানায়নি। 
জাহাঙ্গীরের বাবা আবদুল আজিজ দাবি করেন, ভবনধসে বহু লোক মারা যাওয়ার ঘটনা অপরাধ হলে তার সঙ্গে যুক্ত সোহেল রানা ও তাঁর বাবা আবদুল খালেক। তাঁরা আত্মীয় হলেও অর্থনৈতিক বা ব্যবসায়িক কোনো সম্পর্ক তাঁদের সঙ্গে নেই। ওই ভবনের কোনো অংশীদারিও তাঁদের নেই। পরিবারের কেউ ওই ভবনে চাকরি বা তদারকিতেও ছিলেন না। পুলিশ হয়রানির উদ্দেশ্যে তিন মাসের বাচ্চাসহ তাঁর ছেলে ও ছেলের বউকে আটক করেছে। 
এর আগে গতকাল রাতে রানা প্লাজায় অবস্থিত নিউ ওয়েভ বটমস ও নিউ ওয়েভ স্টাইল গার্মেন্টসের দুই মালিক বজলুস সামাদ আদনান ও মাহমুদুর রহমান তাপসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। 
গত বুধবার সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে নয় তলাবিশিষ্ট রানা প্লাজা ভবনটি ধসে পড়ে। এতে তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে।

Friday, April 26, 2013

বাড়ি থেকে মালামাল সরাচ্ছেন রানা


সাভারে ধসে পড়া ভবনের মালিক সোহেল রানা অজ্ঞাত স্থানে থেকেই তার বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন।
পুলিশ বলছে, রানার সন্ধান এখনো না পেলেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
বুধবার সকালে ধসে পড়া নয় তলা ভবন রানা প্লাজার মালিক রানা যুবলীগের স্থানীয় নেতা।
নিজেকে পৌর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হিসেবে তুলে ধরে রানা কিছুদিন আগেও সাভারে অনেক পোস্টার সাঁটিয়েছিলেন, যাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদেরও ছবি রয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সংসদে বলেছেন, রানা যুবলীগের কমিটিতে নেই।
ভবন ধসে আড়াই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় শ্রম আদালতে রানার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়েছে। পুলিশ ও রাজউক বাদী হয়ে মামলা করেছে দুটি।
ধসের সময় রানা ভবনেই ছিলেন। জনতার রোষানল থেকে বাঁচাতে ধসের ঘণ্টা খানেক পর মুরাদ জং গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এরপর থেকে রানাকে কোথায় দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাভার বাজার রোডে রানার বাড়িতে গেলে সেখানে তার পরিবারের কাউকেই পাওয়া যায়নি।
তবে  বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিতে কয়েকজনকে দেখা যায়, যারা নিজেদের রানার কর্মচারী বলে পরিচয় দেন।
মালামাল কোথায় নেয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে এদের একজন বলেন, ““এ বিষয়ে বলতে মানা আছে।”
পুলিশের করা মামলায় রানার সঙ্গে তার বাবা আব্দুল খালেককেও আসামি করা হয়েছে। খালেকও আত্মগোপনে রয়েছেন।
রানা ও তার বাবা কোথায়- জানতে চাইলে কর্মচারীরা বলেন, তা তারা জানেন না।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রানাকে ধরতে র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক দল অভিযানে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, রানাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সাভারে রানা প্লাজার ধ্বংস্তূপে চলছে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান।
সাভারে রানা প্লাজার ধ্বংস্তূপে চলছে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়েছে।
সাভার মডেল থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলা হওয়ার পর থেকেই আসামিদের খুঁজছি।”
এদিকে রানাকে মদদ দেয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সংসদ সদস্য মুরাদ জং সাংবাদিকদের বলেন, কাজেই তার প্রমাণ দেবেন তিনি।
এদিকে যুবলীগের স্থানীয় এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোহেল রানা দেশের বাইরে পালানোর পরিকল্পনা করেছেন।
ধসে পড়া ভবনে মঙ্গলবার রাতে ফাটল দেখা দিলেও তাতে গা করেননি রানা। তিনি তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সামান্য আস্তর খসে পড়েছে মাত্র।
রানা প্লাজা ছাড়াও বাজার রোডে রানাম মালিকানাধীন আরেকটি ভবন রয়েছে। ওই ভবনে বৃহস্পতিবার ফাটল দেখা দিলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় ভবনের বাসিন্দাদের মধ্যে।
স্থানীয়রা জানায়, তেলের ঘানির মালিকের ছেলে রানা রাজনৈতিক প্রভাবে অর্থশালী হয়ে ওঠেন।
বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদও বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল করে সোহেল রানা স্থানীয় সংসদ সদস্যের মদদে এই অননুমোদিত ভবনটি (রানা প্লাজা) নির্মাণ করেছে।
“ক্ষমতাসীন দলে বলে প্রশাসনও তাদের ভয় পায়। তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি।”

‘চিৎকার দিয়া কইলাম কিছু একটা দেন ডাইন হাতটা কাটি’

ভবন ধসে পড়ার সময় রত্না বেগম ছিটকে উপুড় হয়ে পড়েন। ওপরে এসে পড়ে বয়লারের উত্তপ্ত পাইপ। তার ওপর ছাদের কঠিন কংক্রিট। পাইপের তাপে চামড়া পুড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু নড়ার উপায় নেই। দীর্ঘ ২০ ঘণ্টা ওই অবস্থায় থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
রানা প্লাজার মৃত্যুগহ্বর থেকে উদ্ধার পাওয়া অনেকেই শুনিয়েছেন এ রকম একেকটি মর্মস্পর্শী আর শিউরে ওঠার মতো কাহিনি।
হাসপাতালে নেওয়ার পর একটু সুস্থ হয়ে রত্না বেগম বললেন, ‘মাথার উপরেই ছাদ। কান্দে আর হাতে গরম পাইপ লাইগা রইছে। পুইড়া যাইতেছিলাম। তয় নড়বার পারতেছিলাম না। অন্ধকার। ছোড ছোড নিঃশ্বাস নিছি। চোখ বুইজা খালি কানছি।’
উদ্ধার পাওয়ার বর্ণনা দিয়ে রত্না বলেন, ‘হঠাৎ খটখট আওয়াজ আসে। ‘কেউ আছেন?’ ‘কেউ আছেন?’ বইলা কারা জানি চিৎকার করতেছিল। আমিও ‘বাঁচান’ ‘বাঁচান’ বলে চিল্লান দেই। পরে কয়েকটা ছেলে দেওয়াল কাইট্যা আমারে হাসপাতালে নিয়া আসে।’
ভবনধসের দিন বুধবারই উদ্ধার হন পোশাককর্মী নূপুর বেগম (২৫)। সাভারের নিউ দ্বীপ ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন তিনি। বাঁচার তীব্র আকাঙ্ক্ষায় একপর্যায়ে নিজের আটকে পড়া হাত কেটে ফেলবেন বলে ঠিক করেছিলেন নূপুর। সাহসী এই নারী তাঁর অভিজ্ঞতা শোনালেন এভাবে: ‘এক হাতেরও কম জায়গায় আইটকা ছিলাম। মাথা দিয়া রক্ত পড়তেছিল। আমার ডান হাতের ওপর একটা লাশ। আর লাশটার উপরে দেওয়াল। হাত বাইর করতে পারতেছিলাম না। ছোট একটা ফাঁক দিয়া দেখি, অনেকেই হাঁটতেছে। বাম হাত একটু বাইর কইরা আমি চিৎকার দিয়া কইলাম, ভাই কিছু একটা দেন, ডাইন হাতটা কাটি।’
নূপুর জানান, তাঁকে বাইরে থেকে একটা ছোট বঁটি দেওয়া হয়। কিন্তু তা দিয়ে হাত কাটতে পারেননি। অনেকক্ষণ পরে দেওয়াল তুলে কয়েকজন তরুণ তাঁকে উদ্ধার করেন।
গতকাল বেলা পৌনে দুইটার দিকে উদ্ধারকারীরা আসমা বেগম নামের এক তরুণীকে এনাম হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন আসমার জ্ঞান ছিল না। তবে সঙ্গে থাকা মায়ের সেবা-শুশ্রূষায় কিছুক্ষণের মধ্যেই চেতনা ফিরে পান। আসমা বললেন, সৌভাগ্যক্রমে তাঁর আঘাত লাগেনি। তবে প্রচণ্ড ভয় পেয়েছেন। একটি ভারী মেশিনের আড়ালে থেকে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু তাঁর গা ঘেঁষেই পড়ে ছিল পাঁচটি মৃতদেহ!
প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর উদ্ধার পান সপ্তম তলার কর্মী মেঘলা আক্তার। হাসপাতালে তিনি বলেন, ‘বিল্ডিং ভাইঙ্গা পড়ার লগে লগে আমি দৌড় দেই। ফ্লোরটা (মেঝে) লিফটের মতো নিচে নামতে নামতে ঘটাং কইরা থামে। আর দড়াম কইরা ছাদ ভাইঙ্গা আইসা ঠেকল মাথার একটু উপরেই। আমার আশেপাশে আরও কয়েকজন ছিল। তারা কানছিল, চিক্কুর পারতেছিল। তয় চাইরদিক অন্ধকার বইলা কাউরে দেহা যাইতেছিল না। একজন মোবাইলের লাইট জ্বালাইল। দেখলাম, আমার পাশে পইড়া আছে একটা মাইয়ার লাশ। হেরপর আমিও কান্নাকাটি শুরু করি।’
মেঘলা বেঁচে গেলেও একই ভবনে কর্মরত তাঁর স্বামী আবদুল বাতেনের খোঁজ মেলেনি এখনো।
অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে: উদ্ধারকাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম সোলায়মান গতকাল রাতে বলেন, ভবনের এক জায়গায় একসঙ্গে ১৩ জন, আরেক জায়গায় একসঙ্গে ৪০ জনকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। তবে একেবারে ভেতরে থাকায় তাঁদের উদ্ধার করা যাচ্ছে না। তাঁদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য ৫০০ ফুট পাইপ দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খাবার ও পানীয় দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

৪৮ ঘণ্টা পর শিল্প পুলিশের দুই সদস্য জীবিত উদ্ধার


সাভারে রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর আজ শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে শিল্প পুলিশের দুই সদস্যকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের এখন সাভারে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এই দুজন হলেন শিল্প পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মুকুল ও কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম।
শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবন ধসে পড়তে পারে—এমন গুজব শুনে গত বুধবার সকালে এএসআই মুকুল ও কনস্টেবল রফিকুল রানা প্লাজা পরিদর্শনে যান। তাঁরা তিন তলায় অবস্থানকালে সকাল পৌনে নয়টার দিকে ভবনটি ধসে পড়ে। এতে তাঁরা দুজন আটকা পড়েন। আজ সকাল নয়টার দিকে জীবিত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে সাভার সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। 
শিল্প পুলিশের আশুলিয়া অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, মুকুল ও রফিকুল দুজনই সুস্থ রয়েছেন। তাঁরা শঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকদের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন।

Wednesday, April 24, 2013

উদ্ধারের পর অজ্ঞাত স্থানে মালিক

নিজের ভবন রানা প্লাজা যখন আজ বুধবার সকাল নয়টার দিকে ধসে পড়ে, তখন সেখানেই ছিলেন ভবনটির মালিক সোহেল রানা। তাঁর আরেকটি পরিচয় তিনি সাভার পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। 
যোগাযোগ করা হলে সোহেল রানার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথম আলো ডটকমকে জানান, ওই ভবনের ভূগর্ভস্থ তলাটি গাড়ি রাখার জন্য বরাদ্দ। তবে সেখানে রানার একটি অফিস আছে। দুর্ঘটনার সময় তিনি তাঁর অফিসে ছিলেন। ভবনটি এক তলা পর্যন্ত ধসে পড়ার পর আটকে যায়। এতে সোহেল রানা ভেতরে আটকা পড়েন। তাঁকে দুপুর ১২টার দিকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর তিনি ঢাকায় কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান জাহাঙ্গীর।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সোহেল রানার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। 
এদিকে সাভারের ভবনধসের ঘটনা তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। আজ সাভারে ভবনধসের ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন বলেন, ‘বিধি-নির্দেশনা অনুযায়ী এই ইমারত নির্মাণ করা হয়নি। যে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে এ কাজ শুরু করার কথা ছিল, সেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি এখানে ছিল না। বিষয়টি তদন্ত করে এ ক্ষেত্রে যারা দোষী, তাদের আমরা যথাযথ আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেব, যাতে ভবিষ্যতে অন্য কেউ, অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ এ ধরনের গাফিলতির মাধ্যমে আমাদের জনগণের জীবন বিপন্ন করতে না পারে।’

রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন আবদুল হামিদ


দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন আবদুল হামিদ। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বঙ্গভবনের দরবার হলে ভারপ্রাপ্ত স্পিকার শওকত আলী নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান। 
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। শপথ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 
সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির শপথবাক্য পাঠ করাতেন স্পিকার। পঞ্চম সংশোধনীতে প্রধান বিচারপতির কাছে শপথের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হয়। সর্বশেষ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিকে শপথ করানোর দায়িত্ব স্পিকারের ওপর প্রত্যর্পণ হয়। 
আবদুল হামিদের শপথ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে সংসদের স্পিকারের পদ এবং তাঁর সংসদীয় আসন শূন্য হয়ে যায়।

SEO এক্সপার্ট হবার তিনটি পক্রিয়া এবং বাংলাদেশে এর ভবিষ্যৎ


SEO, এস.ই.ও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। ২০১২ তে বাংলাদেশ এই SEO এর উপর কাজ করে ফ্রিলেন্সার.কম এ বিশ্বের মধ্যে প্রথম হয়েছে এবং অনলাইন মার্কেট প্লেসে যতগুলা কাজ রয়েছে তার মধ্যে এই SEO, এস.ই.ও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমেই বাংলাদেশের ফ্রিলেন্সাররা সবচেয়ে বেশি আয় করেছে। এস.ই.ও. (SEO) নিয়ে এত কিছু ঘটার পর বাংলাদেশের এখন দিন দিন এস.ই.ও. (SEO) ফ্রিলেন্সার-এর সংখ্যা বাড়ছে।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না এস.ই.ও. (SEO) নিয়ে আমাদের দেশের প্রফেশানাল , স্টুডেন্ট সহ সবার মাঝে বেশ আগ্রহ । সোশ্যাল মিডিয়াতে বিশেষ করে ফেইসবুকে এস.ই.ও. undefined(SEO) কে ঘিরে অনেকগুলো গ্রুপ তৈরি হয়ে উঠেছে। সেখানে শুধুমাত্র এই এস.ই.ও. (SEO) নিয়ে অনেক আলোচনা হয় । অনেকে শেখার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার কথা বলে থাকেন। সবার সমস্যা এক হয় না । অনেকে বলে থাকেন তারা গাইডলাইন পাচ্ছেন না, অনেকে বলেন কোথা থেকে শুরু করবেন তা বুঝতে পাচ্ছেন না । অনেকে আবার ক্যারিয়ার হিসাবে এস.ই.ও. (SEO) কেমন হবে বুঝতে পাচ্ছেন না ।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হচ্ছে ধারাবাহিক পরিবর্তনের মধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের উন্নতি সাধন করা। এই পরিবর্তনগুলো হয়তো আলাদা ভাবে চোখে পড়বে না কিন্তু সামগ্রিকভাবে এর মাধ্যমে একটি সাইটের ব্রাউজিং এর স্বাচ্ছন্দবোধ অনেকাংশে বেড়ে যায় এবং অর্গানিক বা স্বাভাবিক সার্চ রেজাল্টে সাইটকে শীর্ষ অবস্থানের দিকে নিয়ে যায়। সাবাই চায় তার ব্লগ বা ওয়েব সাইট গুগল কিংবা বিং-য়ের সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজ (SERP)-এর সবচেয়ে উপরের দিকে রাখতে। আর এই জন্যই ইফেক্টিভ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে হয় যেন সার্চ ইঞ্জিন ওয়েবসাইট বা এর কনটেন্টকে গুলোকে দ্রুত খুঁজে পায় এবং সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজ (SERP) এর প্রথমদিকে প্রদর্শন করতে পারে।
ফ্রিলেন্সার.কম, অনলাইন মার্কেটপ্লেস বা আনতর্জাতিক ভাবে এস.ই.ও. (SEO) ব্যবহারের কথা অনেক হয়েছে এবার আসুন দেখেনিই ছোট একটা উধাহরনের মাধ্যমে বাংলাদেশে এস.ই.ও. (SEO) এর অবস্থান বা প্রয়োজন। আমাদের দেশে এস.ই.ও. (SEO) নিয়ে এখন পর্যন্ত খুব বেশি কাজের ক্ষেত্র নেই। কিন্তু বর্তমানে পত্রিকা, অনলাইন নিউজ মাধ্যম এবং অন্যান্নরা যেভাবে অ্যালেক্সা রেংক নিয়ে মারামারি করছে তাতে স্পস্ট করে বলা যেতে পারে খুব দ্রুতই বাংলাদেশে বড় আঁকারে এস.ই.ও. (SEO) অ্যাডইজার / স্পেশালিষ্ট এর প্রয়োজন দেখা দিবে। শুধুমাত্র ডোমেইনের শেসে “…নিউজ২৪ ” এরকম সংবাদ মাধ্যমের সংখ্যা চব্বিশটারও বেশি। ধরেন না গতকাল আপনি হটাৎ একটি “…নিউজ২৪”-এ ফটাৎ করে ঢুকে পরছেন কিন্তু আজ বসে সেই “…নিউজ২৪” আর পাচ্ছেন না, গুগোল মামা বারবার চলে যাচ্ছে অন্য “…নিউজ২৪”এ? এর মুল কারনই হচ্ছে ফটাৎ করে ঢুকে পরা গতকালকের “…নিউজ২৪” এর চেয়ে আজকের বারবার চলে আসা “…নিউজ২৪” টি এস.ই.ও. (SEO)-এর দিকে বেশি গুরত্ত দিয়েছেন। অর্থাৎ বাকিরাও খুব দ্রুতই এস.ই.ও. (SEO)-এর উপর গুরত্ত দিবে এবং একজন এস.ই.ও. (SEO) অ্যাডইজার / স্পেশালিষ্ট কে খুঁজবে। অর্থাৎ বাংলাদেশে বড় আঁকারে এস.ই.ও. (SEO) অ্যাডইজার / স্পেশালিষ্ট প্রয়োজন দেখা দিবে অচিরেই।
আপনি হয়ে উঠতে পারেন একজন আদর্শ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন অ্যাডইজার বা এস.ই.ও. এক্সপার্ট। এস.ই.ও. এক্সপার্ট হতে আপনার কোন প্রকার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই।
○ কি কি শিখা দরকার এস.ই.ও. (SEO) এক্সপার্ট হয়ার জন্য? বা এস.ই.ও. (SEO) এর মুল বিষয় গুলো কি কি এক নজরে দেখে নিই।
• এসইও কি, এসইও কতপ্রকার, এসইও টাইটেল ট্যাগ, এসইও মেটাট্যাগ, এসইও এংকরট্যাগ
• সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে ওয়েবসাইটের ইউ আর এল (URL) রেজিট্রেশন করা।
• গুগল ওয়েবমাস্টার টুলস বানানো এবং এর ব্যবহার পদ্দতি।
• ভিবন্ন ওয়েব অ্যানালাইজার সেট-আপ এবং মেইনটেন করা।
• অ্যালেক্সা টুলবার, লিংক, র‍্যাংক সহ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা।
• একটি ওয়েব-সাইটের A to Z এস.ই.ও. (SEO)সমাধান।
• ইমেজ/ছবি, ভিডিও বা অডিও সার্চের জন্য আলাদা এস.ই.ও. (SEO) টিপস।

e স্মার্টফোনের ৫ নিরাপত্তা টিপস

নজরে রাখুন নিজের যন্ত্র
অসাবধানতায় বা ভুল করে যাতে আপনার যন্ত্রটি রেস্তোরাঁ, ইন্টারনেট ক্যাফে, যানবাহন অথবা বাইরে কোথাও ফেলে রেখে না আসেন, এ ব্যাপারে সচেষ্ট থাকুন। আপনার স্মার্টফোন অ্যান্ড্রয়েড-চালিত হলে অবশ্যই একটি নিরাপত্ত অ্যাপ্লিকেশন বা অ্যাপ ইনস্টল করে রাখুন, যাতে যন্ত্রটি হারিয়ে গেলে সেটি কোথায় আছে, তা চিহ্নিত করা যায়। প্রতিটি স্মার্টফোনের নিজস্ব বা অন্যের তৈরি অ্যাপ পাওয়া যায়। আইফোন ব্যবহারকারীরা এ ধরনের একটি অ্যাপ্লিকেশন http://bit.ly/azWnft ঠিকানা থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

ব্যবহার করুন নিরাপত্তা সংকেত
প্রতিটি স্মার্টফোনেই নিরাপত্তা সংকেত ব্যবহার করে ফোন আনলক করে রাখা যায়। নিরাপত্তা সংকেতটি অবশ্যই সহজ না হয়ে কঠিন হওয়া উচিত। মাঝে মাঝে এই সংকেত বদলানো উচিত। তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ আপনার যন্ত্রে ঢুকতে পারবে না। এমনকি ফোনটি চুরি হয়ে গেলে বা হারিয়ে গেলেও তথ্য থাকবে সুরক্ষিত। নিরাপত্তা কোড বা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে প্রথমে স্মার্টফোনের Setting-এ গিয়ে Security অপশনে যান। এরপর Change screen lock অপশনে গিয়ে Password অপশনটি পাবেন।

অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
স্মার্টফোনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এতে নানা ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যায়। প্রায় সব ধরনের কাজের জন্যই আপনি প্রচুর অ্যাপ্লিকেশন পাবেন অ্যাপস স্টোর থেকে বিনা মূল্যে। বিনা মূল্যে পাওয়া যেকোনো অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার আগে ভেবে দেখুন, এটি একটি ম্যালওয়্যার বা ভাইরাসও হতে পারে কিংবা আপনার মুঠোফোনের নিরাপত্তায় ছিদ্র তৈরি করে দিতে পারে। তাই যেকোনো অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার আগে অবশ্যই দেখে নেবেন, অ্যাপ্লিকেশনটি কারা তৈরি করেছে, এর কী কাজ ও এর পর্যালোচনাগুলো। এ ছাড়া একটি ‘মোবাইল সিকিউরিটি অ্যাপস’ স্মার্টফোনে ইনস্টল করে রাখুন, যাতে নতুন কোনো অ্যাপ্লিকেশন নামানোর আগে সেটি আপনাকে সতর্ক করে দিতে পারে যে অ্যাপ্লিকেশনটি যন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর কি না।

সতর্ক থাকুন ওয়াই-ফাই জোনে
ওয়াই-ফাই হটস্পটে প্রায় সবাই পাবলিক ওয়াই ফাই ব্যবহার করতে পারে। এ বিষয়টি স্মার্টফোনের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। যেসব হটস্পটে নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল, সেখানে পারতপক্ষে ইন্টারনেট ব্যবহার না করাই ভালো। যেসব নেটওয়ার্ক ডব্লিউপিএ ২-এর বদলে ডব্লিউপিএ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, সেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলে ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। যেসব নেটওয়ার্কে হালনাগাদ প্রযুক্তির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়, সেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন।

মুছে ফেলুন সব তথ্য
স্মার্টফোনটি হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে ফোনে সংরক্ষিত সব তথ্য আপনি চাইলে মুছে ফেলতে পারেন। আপনার ফোনটি যদি অ্যান্ড্রয়েড, ব্ল্যাকবেরি কিংবা উইন্ডোজ ফোন হয়, তাহলে অন্যদের তৈরি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সহজে রিমোটলি সব তথ্য ফোন থেকে মুছে ফেলা যায়। যেমন আইফোনের ক্ষেত্রে মোবাইলমি (MobileMe) অ্যাপটি চালু করে নিলে এটি ব্যবহার করে অ্যাপলের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আইফোনটিকে ট্র্যাক করা যায় কিংবা সব তথ্য রিমোটলি মুছে ফেলা যায়। অ্যাপ্লিকেশনটি অ্যাপল স্টোর থেকে নামিয়ে নিতে পারবেন।

নিরাপত্তা হালনাগাদ রাখুন
আপনার স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপ্লিকেশনগুলোর সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করুন অথবা সেগুলো হালনাগাদ রাখুন সব সময়। হালনাগাদ ফাইলে নতুন নতুন ফিচার যুক্ত হয়, যা অপারেটিং সিস্টেমে বা অ্যাপসে কিছুটা পরিবর্তন এনে দেয়। এ ছাড়া হালনাগাদ ফাইলগুলোয় সিকিউরিটি ফিক্সের বিষয়গুলোও থাকে, যা আপনার স্মার্টফোনটিকে আরও নিরাপত্তা দেয়। তাই স্মার্টফোনে হালনাগাদের কোনো নোটিফিকেশন এলে দেরি না করে হালনাগাদ করাই ভালো।

জিপিএস চালু রাখুন প্রয়োজনে
আপনার বর্তমান অবস্থানটি সবার কাছে প্রকাশ না করতে চাইলে জিপিএস বন্ধ রাখুন। কেবল প্রয়োজনেই জিপিএস ব্যবহার করুন। যেসব অ্যাপ্লিকেশনে আপনার অবস্থান-সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়, সেগুলোও পরিহার করার চেষ্টা করুন। কারণ, আপনার অবস্থান-সম্পর্কিত তথ্য ব্যবহার করে অনেকেই আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করতে পারে।

নিষ্ক্রিয় রাখুন ব্লুটুথ
অনেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ব্লুটুথ সব সময় সক্রিয় রাখেন। ব্লুটুথ সহজেই হ্যাকারদের জন্য সিকিউরিটি হোল তৈরি করে দেয়। কাজেই ব্লুটুথ সব সময় অফ করে রাখাই নিরাপদ। তা ছাড়া ব্লুটুথ অন থাকলে স্মার্টফোনের ব্যাটারির চার্জও দ্রুত শেষ হয়।

‘শ্রমিকদের কারখানায় ঢোকানো হয় জোর করে


পোশাক শ্রমিকদের জোর করে রানা প্লাজার বিভিন্ন কারখানায় ঢোকানো হয় বলে আহত শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন।
আগের দিন ভবনে ফাটল দেখার পরেও বুধবার সকালে নয়তলা ওই ভবনের চারটি ফ্লোরে তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ শুরু হয়।
ভবনের তৃতীয় তলার নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেড, চতুর্থ তলার প্যান্টম এ্যাপারেলস লিমিটেড, পঞ্চম তলার প্যান্টম ট্যাক লিমিটেড ও ষষ্ঠ তলার ঈথার টেক্সটাইল লিমিটেডে পাঁচ থেকে ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করেন।
কারখানায় কাজ শুরুর কিছু সময় পর সকাল ৯টার কিছুক্ষণ আগে ভবনটি ধসে পড়ে। ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে বহু লোক হতাহত হন।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই ভবনের পঞ্চম তলার ফ্যান্টম ট্যাক লিমিটেড কারখানার কর্মী আকলিমা।
তিনি বলেন, “আগের দিন ভবনে ফাটল দেখা দেয়ায় আমরা কারখানায় যেতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু সকালে কারখানার অফিসাররা আমাদের জোর করে কারখানায় ঢোকায়।”
ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে তার ছোট বোন সৌদিয়া মারা গেছেন বলে জানান আকলিমা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুরুল ইসলাম নামের আরেক শ্রমিক বলেন, “আমরা কেউ ভবনে ঢুকতে চাচ্ছিলাম না। বসরা আমাদের লাঠি নিয়ে তাড়ে করেন। পরে বাধ্য হয়ে আমরা কারখানায় যাই।”
সকাল ৯টার দিকে ভবনটি ধসে পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয়। তারপরে ভবনটি ধসে পড়ে।
ধসের সময় ভবনের পঞ্চম তলায় দুই শতাধিক মানুষ ছিল বলে জানান তিনি।
ভবনের চারতলায় ফ্যান্টম এ্যাপারেলস লিমিটেডে কাজ করতেন নাজমা আক্তার। দুর্ঘটনার পাঁচ ঘণ্টা পরেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
নাজমাকে খুঁজতে এসে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আহাজারি করছিলেন তার স্বামী রানা।
তিনি বলেন, কারখানার পাশেই তাদের বাসা। কাজে যোগ দেয়ার জন্য সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আসেন তার স্ত্রী।
“দুর্ঘটনার খবর শুনেই ছুটে আসি। কিন্তু এখনো ওর কোনো খোঁজ পেলাম না।”
এদিকে, আহতদের সামলাতে হিমশিম খেতে দেখা যায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের।
চিকিৎসকদের পাশাপাশি তাদের শিক্ষার্থীরাও আহতদের সেবায় নিয়োজিত হয়েছেন।
এই মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ ইকবাল বলেন, “আহতদের স্থান সংকুলান করা যাচ্ছে না। এজন্য অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।”
হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সাড়ে সাতশ’ শয্যার এই হাসপাতালে আর কোনো শয্যা খালি নেই। মেঝেতে শুইয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে অনেককে। আর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রয়েছে আহতদের উপড়ে পড়া ভিড়।
ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) ২৫ জন শিক্ষকের একটি দল এনাম মেডিকেলে আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
এই চিকিৎসকদের দলের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল গনি মোল্লা জানান, তারা দুইটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসেছেন। যাদের অবস্থা গুরুতর তাদের ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

ভবন মালিককে ‘উদ্ধার’ করেন সাংসদ


খবর > বাংলাদেশ > ভবন মালিককে ‘উদ্ধার’ করেন সাংসদ

ভবন মালিককে ‘উদ্ধার’ করেন সাংসদ

1 / 1
সাভারের বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বহুতল ভবন ‘রানা প্লাজার’ মালিক স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. সোহেল রানাও ভবনটি ধসের সময় নিচতলা ছিলেন।
জনতার রোষানলে পড়ার ভয়ে তিনি বের হতে না পেরে স্থানীয় সাংসদসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের খবর দেন। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাংসদ তৌহিদ জং মুরাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবন মালিক রানাকে বের করে নিয়ে যান।
ভবন ধসে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটলেও সোহেল রানা আঘাত পাননি বলে জানান ঘটনাস্থলে রানার সঙ্গে থাকা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু অ্যাডভোকেট মাসুদ চৌধুরী।
মাসুদ তার ব্যক্তিগত গাড়িটি রানা প্লাজার নিচতলায় গ্যারেজে রাখতেন। সেখানে রানার ব্যক্তিগত অফিসও রয়েছে। সকালে গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করতে গিয়েছিলেন মাসুদ।
তিনি জানান, ভবনের পেছন দিক থেকে ধস শুরু হয়। কংক্রিটের চাপে তার গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। তবে তিনি নিরাপদে ছিলেন।
মঙ্গলবার বিকালেই ভবনটিতে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিলে ভবন মালিক সাভার পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. সোহেল রানা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ভবনের বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়নি। সামান্য একটু প্লাস্টার খসে পড়েছে। এটা তেমন কিছু না।”
যদিও স্থানীয় প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক ভবন ঘুরে দেখে বলেছিলেন, ভবনের নিরাপত্তার স্বার্থে বুয়েট থেকে প্রকৌশলী এনে পরীক্ষা করা প্রয়োজন, তা না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নয় তলা ভবনটি ধসে পড়ে বহু মানুষ হতাহত হয়। ওই ভবনে চারটি তৈরি পোষাক কারখানা রয়েছে, যেখানে প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করে। ধসের সময় কারাখানায় কাজ চলছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

‘একটা পিলার ফাটলে কিছু হয় না’

কিছু হবে না—এই ভরসা নিয়ে দুরু দুরু বুকে রানা প্লাজা ভবনের পোশাক কারখানায় কাজে গিয়েছিলেন শ্রমিক শিরিন। এখন মাথায় গুরুতর জখম নিয়ে তিনি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 
আজ বুধবার সকাল নয়টায় সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে ধসে পড়া ওই ভবনের আহত অনেকেই এখন শিরিনের মতো একই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একসঙ্গে এত আহত লোকের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। আহত ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনদের আর্তনাদ আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ। 
সরেজমিনে দেখা যায়, এনাম হাসপাতালের প্রতিটি ফ্লোরে আহত মানুষের ছড়াছড়ি। রক্তাক্ত এসব মানুষের কারও হাড় ভেঙেছে, কারও অঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, কারও-বা থেঁতলে গেছে মাংস। 
সারা শরীরে রক্তমাখা শিরিনের ভাষ্য, গতকাল মঙ্গলবার সকালে ওই ভবনে ফাটল দেখা দিলে তাঁদের পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। আজ কাজে গিয়ে শ্রমিকেরা তাঁদের আতঙ্কের কথা জানান। তবে কর্তৃপক্ষ তা কানে তোলেনি। ‘কিছু হবে না’ বলে একরকম জোর করে তাঁদের কারখানায় ঢোকানো হয়। রানা নামের একজন তখন হ্যান্ডমাইকে বলতে থাকেন, ‘একটা পিলার ফাটলে কিছু হয় না!’ 
একটি পোশাক কারখানার আয়রনম্যান শামীম আহাজারি করতে করতে বলেন, তিনি রানা প্লাজার পঞ্চম তলায় একটি নিটওয়্যার কারখানায় কাজ করছিলেন। বিকট শব্দ শুনে তিনি দৌড়ে পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নামতে যান। কিন্তু খানিকটা নামার পরই ধসে পড়া দেয়ালের কিছু অংশ তাঁর শরীরের ওপর পড়ে। চাপা পড়ে যায় তাঁর এক হাত। সেখানে বসেই তখন তিনি ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ আর ‘বাঁচাও’ ‘বাঁচাও’ করে চিত্কার করতে থাকেন। পরে স্থানীয় লোকজন গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। শামীমের বাড়ি মানিকগঞ্জে। তিনি কলেজে দুই মাসের ছুটি পেয়ে এখানকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতে যান।
গুরুতর আহত হয়েছেন কোহিনূর। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়েছিলেন স্বামী হামিদুর, ভাশুর শফিকুর ও জা সীমা; তাঁদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তিনি তা জানেন না। ভবনটি ধসে পড়ার পর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পর দেখেন, তিনি এনাম হাসপাতালের ফ্লোরে। 
ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় আহত আরেকজন রাশিদা বেগম। তিনি ওই ভবনের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। স্বজনেরা তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি বলছিলেন, কাজের জন্য কারখানায় যাওয়ার কিছুক্ষণ পর বোমার মতো আওয়াজ হলো। তখন তিনি মেশিনের নিচে চলে যান। পরে আলো দেখে কীভাবে যে বাইরে আসেন, তা তিনি মনে করতে পারছেন না। তাঁর সঙ্গীদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা জানাতে পারেননি তিনি।

সাভারে মৃতের সংখ্যা ৮০, উদ্ধার চলছে


ঢাকার অদূরে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের একটি বহুতল ভবন আজ বুধবার সকালে ধসে পড়ে। এ ঘটনায় বেলা একটা পর্যন্ত অন্তত ৮০ জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। উদ্ধারকাজ চলছে।
নয়তলা ওই ভবনে বিপণিকেন্দ্র, পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ছিল। ধসে পড়ার সময় সেখানে বহু মানুষ ছিল বলে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জি প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ভবনের কয়েকটি তলায় পোশাক কারখানাসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ছিল। বিপুলসংখ্যক মানুষ ভেতরে আটকা পড়েছে। বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। দুর্ঘটনার পর থেকে বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ উদ্ধার তত্পরতায় অংশ নিচ্ছেন। ওই ভবন থেকে শত শত আহত মানুষকে উদ্ধার করে আশপাশের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

অন্তত ৮০ জন নিহত

ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সমন্বয়) রুহুল ফোরকান প্রথম আলো ডটকমকে বেলা একটার দিকে জানান, তাঁরা ধারণা করছেন, মৃতের সংখ্যা এখন ৮০। এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিত্সক মনিরুজ্জামান বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলো ডটকমকে জানান, ওই সময় পর্যন্ত এই হাসপাতালের মর্গে অন্তত ৩০ জনের লাশ রাখা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (অপারেশন) ভরতচন্দ্র বিশ্বাস দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন। একই সময়ে তিনি জানিয়েছিলেন, ধসে পড়া ভবন থেকে তাঁর উপস্থিতিতেই অন্তত আট থেকে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগই নারী। 

দুর্ঘটনার ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের ডিজির বক্তব্য

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার আলী আহমেদ দুপুর ১২টার দিকে প্রথম আলো ডটকমকে জানান, ভবনটি পুরোপুরি মাটির সঙ্গে মিশে যায়নি। ধসে পড়া ভবনের নিচে কিছু ফাঁকা জায়গা আছে। সেখান দিয়ে ভেতরে ঢুুকে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। কিছু ফাঁকা জায়গায় অক্সিজেনের অভাব থাকায় উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে। 
ডিজি জানান, ওই সময় পর্যন্ত ১০০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ভেতরে পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোক আটকা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা নিশ্চিত করে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

নয়তলা ভবনে বহু প্রতিষ্ঠান

সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশেই নয়তলা রানা প্লাজা ভবনটি। এতে ভূগর্ভস্থ তলায় গাড়ি রাখার জায়গা। দ্বিতীয় তলার বিপণিকেন্দ্রে বহু দোকান ছিল। তৃতীয় থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত পোশাক কারখানা। এর ওপরের দুটি তলা খালি ছিল। ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ছিল প্রথম তলায়।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বহুতল এ ভবনের কয়েকটি তলা নিচে দেবে গেছে। কিছু অংশ পাশের একটি ভবনের ওপর পড়েছে।

‘বোমার মতো আওয়াজ শুনলাম’

ভবনটি ধসে পড়ার ঘটনায় আহত হয়েছেন রাশিদা বেগম। তিনি ওই ভবনে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। স্বজনেরা তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি বলছিলেন, কারখানায় যাওয়ার কিছুক্ষণ পর বোমার মতো আওয়াজ হলো। তখন তিনি মেশিনের নিচে চলে যান। পরে আলো দেখে কীভাবে যে বাইরে আসেন, সে কথা মনে করতে পারছিলেন না রাশিদা। সঙ্গীদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা তিনি জানেন না।

ফাটলের পরও ঝুঁকি নেই জানিয়েছিলেন ইউএনও

ওই ভবনের তৃতীয় তলার একটি পোশাক কারখানায় ফাটল দেখা দিয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কবীর হোসেন সরদার সেটি পরিদর্শনে যান। তখন তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভবনটি ভেঙে পড়ার কোনো কারণ নেই। 
এ ব্যাপারে আজ বক্তব্য জানার জন্য ইউএনওর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। 

মালিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা। দুর্ঘটনার পর থেকে স্থানীয় লোকজন ও আটকা পড়া ব্যক্তিদের স্বজনেরা মালিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, ফাটল দেখা দেওয়ার পরও ভবনটিতে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলায় আজ এত মানুষ জীবনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার শোক প্রকাশ

এ ঘটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

Tuesday, April 23, 2013

লাখ থেকে বিজয়ী ১২

গ্রামে নাকি মেধা কমে যাচ্ছে—প্রায়ই শোনা যায় এমন কথা। শহরে সুযোগ-সুবিধা বেশি, অভিভাবকেরা সচেতন, জানাশোনার পরিবেশও অনুকূলে। তাই শহরের ছেলেমেয়েরাই পড়াশোনা, চাকরি, সৃজনশীল প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভালো করে।
শহর ও গ্রামের এই বৈষম্য নিয়ে যাঁরা উদ্বিগ্ন, তাঁরা কিছুটা হলেও স্বস্তি খুঁজে পাবেন জাতীয় পর্যায়ে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার ফল জেনে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১২ শিক্ষার্থীর ১১ জনই ঢাকার বাইরের। লক্ষাধিক প্রতিযোগীর মধ্য দিয়ে ওরা উঠে এসেছে। তারা ছাড়াও উপজেলা-জেলা পর্যায়ে বিজয়ী প্রায় সাত হাজার শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে আঞ্চলিক পর্যায়ে বিজয়ী হয়ে সনদ ও পুরস্কার পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল ১০টায় ১২ মেধাবীর হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। প্রত্যেক শিক্ষার্থী পাবে এক লাখ টাকা পুরস্কার এবং একটি সনদ। এ উপলক্ষে মা-বাবাসহ পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় একটি সরকারি ভবনে এনে রাখা হয়েছে।
তাদের একজন বুশরা আদিব নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। বুশরার মা মাহমুদা খাতুন জানান, মেয়ে ও স্বামী শাহেদ আলী মণ্ডলকে নিয়ে ঢাকায় এসেছেন পুরস্কার নিতে। শিক্ষক দম্পতির এই মেয়েটি এর আগে ২০১১ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার নেয়। এ ছাড়া সমাপনী পরীক্ষায় রংপুর বিভাগে সে প্রথম হয়।
প্রথমবারের মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভা খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে গত ১৩ মার্চ থেকে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ২০১৩ শুরু হয়। টানা এক মাস মাঠপর্যায়ে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উঠে আসে ৯৬ প্রতিযোগী। ১৩ এপ্রিল জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে সেরা ১২ শিক্ষার্থী।
প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ভাষা ও সাহিত্য, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ। ষষ্ঠ-অষ্টম, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ—এই তিনটি গ্রুপে ১২ জন বিজয়ী হয়।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সেরা মেধাবীরাই তাদের সৃজনী প্রতিভার মাধ্যমে আগামী দিনে যোগ্যতার সঙ্গে দেশ চালাবে এবং বিশ্বসভায় নিজেদের স্থান করে নেবে। তাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসবে বিশ্বসেরা শিক্ষক, সাহিত্যিক, তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী, গণিতবিদ, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশাজীবী।
জাতীয় পর্যায়ের ১২ মেধাবী হলো ‘ভাষা ও সাহিত্য’ বিষয়ে ষষ্ঠ-অষ্টম গ্রুপে ঢাকার ওয়াইডব্লিউসিএ গার্লস স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হুমায়রা আদিবা। তার বাবা ওয়াসার প্রকৌশলী মো. হাসিবুল হাসান। মা শাহাপারা পারভীন প্রথম আলোকে বলেন, আদিবা সামনে বই, পত্রিকাসহ পড়ার উপযোগী কিছু পেলেই খুশি হয়। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের খবর শোনা আর ছবি আঁকা তার শখ। 
ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে নবম-দশম গ্রুপে বিজয়ী হয়েছে রাজশাহী জেলার সরকারি পিএন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আনিকা বুশরা এবং একাদশ-দ্বাদশ গ্রুপে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মধুরিমা সাহা। 
‘দৈনদিন বিজ্ঞান’ বিষয়ে ষষ্ঠ-অষ্টম গ্রুপে নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বুশরা আদিব, নবম-দশম গ্রুপে সুনামগঞ্জ জেলার সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুপান্থ জয় এবং একাদশ-দ্বাদশ গ্রুপে চট্টগ্রাম কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আজমাঈন ইকতিদার বিজয়ী হয়েছে। 
‘গণিত ও কম্পিউটার’ বিষয়ে ষষ্ঠ-অষ্টম গ্রুপে বিজয়ী হয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাহনিক নূর সামীন। নবম-দশম গ্রুপে বিজয়ী হয়েছে রাঙামাটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ভুবন দে। একাদশ-দ্বাদশ গ্রুপে বিজয়ী হয়েছে সিলেট জেলার সরকারি এমসি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আজওয়াদ আনজুম ইসলাম। 
এ ছাড়া ‘বাংলাদেশ স্টাডিজ’ বিষয়ে ষষ্ঠ-অষ্টম গ্রুপে কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আফিয়া আনজুম জামান জেবা, নবম-দশম গ্রুপে রাজশাহী জেলার সরকারি পিএন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোসা. মোসাররত মেহজাবীন এবং একাদশ-দ্বাদশ গ্রুপে বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলার আমতলী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আ. বাছিত মোল্লা বিজয়ী হয়েছে।
শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমবারের মতো এই আয়োজন দেশজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শ্রেণীকক্ষের পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা যাচাইয়ে এই প্রতিযোগিতা বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে এবং প্রতিবছর এর মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে সেরা সৃজনশীল শিক্ষার্থীরা।
সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিচারকমণ্ডলীর একজন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী বলেন, ‘আমার কাছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগটা খুবই ভালো মনে হয়েছে। আরও মনে হয়েছে যারা প্রতিযোগিতা করে উঠে এসেছে তারা উচ্চ মেধাসম্পন্ন, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় তাদের ভুলের মাত্রা উল্লেখ করার মতো কিছু নয়।’
উল্লেখ্য, জাতীয় পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতায় বিচারকদের মধ্যে ছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সেলিনা হোসেন, মোস্তাফা জব্বার, আবদুল মোমেন, সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।

Monday, April 22, 2013

লাগাতার আড্ডা

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফি। হুট করেই এক সহপাঠীকে ভালো লেগেছিল। দীর্ঘদিন ধরে সাহস সঞ্চয় করে যখনই তাঁকে মনের কথা বলবেন ভাবছেন, তখনই সেই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেল। রাফির তখন পুরোই দেবদাস দশা। জীবনের আবহ সংগীতে বাজে বেহালার করুণ সুর! পড়ায় মন বসে না, কিছু ভালো লাগে না। ‘একদিন বন্ধুরা ঠিক করল, রাতে সবাই একসঙ্গে থাকবে। আমিও থাকলাম। রাতের আড্ডায় কথায় কথায় ওরা ধরে বসল, তোর সমস্যা কী? তুই এত চুপচাপ কেন? আমতা আমতা করে বলেই ফেললাম। তাতেই বাধল বিপত্তি। সান্ত্বনা তো দিলই না, উল্টো শুরু হলো খেপানো! রাতভর আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা... ভোরের দিকে আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করলাম, আমিও ওদের সঙ্গে হাসাহাসি শুরু করেছি! পরদিন কোথায় হতাশা, কোথায় ক্লান্তি! একদম ঝরঝরা লাগছিল!’ বলছিলেন রাফি।
বন্ধুদের আড্ডাটাই এমন। ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা যতই ঘিরে ধরুক, একটা নির্মল আড্ডায় যেন সব কর্পূরের মতো উবে যায়! ক্লাস আর কাজের ফাঁকে আড্ডা তো আছেই, রাতের আড্ডাটা তরুণদের বিশেষ পছন্দ। পরীক্ষা শেষ, স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে অনেক দিন দেখা হয় না কিংবা দীর্ঘদিন পর বিলেত থেকে দেশে ফিরেছে এক বন্ধু্—উপলক্ষ একটা পেলেই হলো। রাত জেগে গল্পটা করতেই হবে। কেউ কেউ আবার উপলক্ষের থোড়াই কেয়ার করেন। ‘বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেব, তার আবার উপলক্ষ কী!’
স্কুলের বন্ধু, পাড়ার বন্ধু, কলেজের বন্ধু—বন্ধুর দল থাকে অনেক। তবে রাতের আড্ডার ‘প্রবেশপত্র’ পায় কেবল কাছের বন্ধুরাই। রিয়াজুল আমিন বলছিলেন, ‘মাঝেমধ্যেই সবাই মিলে বন্ধুদের কারও না কারও বাসায় হানা দিই। রাতের আড্ডায় বন্ধুত্বটা আরও গাঢ় হয়। বোঝাপড়াটা বাড়ে। অনেক না-বলা কথা বলা হয়ে যায়। দেশ, সমাজ নিয়ে কথা হয়, নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়।’
সব সময় যে আড্ডাটা ‘নির্মল’ হয়, তা না। কখনো কখনো ক্ষণিকের উত্তেজনা কিংবা কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে তরুণেরা ভুল করে বসেন, আর সেই ভুলের মাশুল দিতে হয় পুরো পরিবারকে। বাবা-মায়ের ভয়টা এখানেই। ছেলের আনন্দে বাদ সাধতে মন চায় না, আবার দুশ্চিন্তাও হয়। এ সমস্যা দূর করতে পারে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস। কথা হলো মুক্তিযোদ্ধা আক্কু চৌধুরীর সঙ্গে। বলছিলেন, ‘যখন তরুণ ছিলাম, আমরাও রাতে বন্ধুর বাসায় থেকেছি, আড্ডা দিয়েছি।’ বাবা-মায়ের শঙ্কা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সন্তানের ওপর আস্থা তৈরি করাটা খুব জরুরি। সন্তানেরও উচিত বাবা-মায়ের আস্থার মর্যাদা দেওয়া। সন্তানের বন্ধু হতে হবে। তরুণেরা জানে কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ।’ 
কমলাপুরের অধিবাসী নাজমা আক্তার। ছেলে শরীফ ছোটবেলা থেকেই বন্ধুপ্রিয়। প্রায়ই ছেলের বন্ধুরা দল বেঁধে হানা দেয় তাঁর বাসায়। ‘আমার ছেলের বন্ধুদের আমি চিনি। ওদের পরিবারের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। আমি জানি, ওরা ভালো ছেলে। ওরা এলে আমারও খুব ভালো লাগে। ওদের জন্য কী রাঁধব, কী খাওয়াব—এসব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাই। আবার ওরাও খেয়াল রাখে, যেন আমার কষ্ট না হয়।’
আড্ডার আনন্দ তো হবেই, সঙ্গে বাবা-মা যেন নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন, সে দায়িত্বও নিতে হবে তরুণদের। কিছু ব্যাপার বিবেচনা করা জরুরি।
 বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের বন্ধুদের সুসম্পর্ক থাকতে হবে।
 পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তোলার দায়িত্ব সন্তান এবং বাবা-মা উভয়েরই। বাবা-মায়ের যেমন অতিরিক্ত সন্দেহ করাটা উচিত নয়, তেমনি সন্তানকেও বাবা-মায়ের কাছে পরিষ্কার থাকতে হবে। বন্ধুদের ফোন নম্বর বাবা মায়ের কাছে দিয়ে রাখতে হবে, বিপদ-আপদে দরকার হতেই পারে।
 বন্ধুর বাড়িতে গেলে অবশ্যই মা-বাবাকে জানাতে হবে। ফোন বন্ধ করে রাখা কিংবা যোগাযোগ না করাটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়।
 বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গেলে তাঁদের যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে ব্যাপারটাও খেয়াল রাখতে হবে।
 হুট করে রাতের বেলা বন্ধুদের গাড়ি নিয়ে লং-ড্রাইভে বেরিয়ে পড়া উচিত নয়।
 কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।
 অবশ্যই পরস্পর পরস্পরকে বুঝতে হবে। বাবা-মা যেমন ছেলের আনন্দটা বুঝবেন, তেমনি সন্তানকেও মা-বাবাকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখার দায়িত্ব নিতে হবে। 
আড্ডা হবে। আনন্দ হবে। মনের ঘুড়ি উড়বে আকাশে, তবে নাটাইটা যেন হাতে থাকে!

হাজারীবাগে ককটেল বিস্ফোরণে শিশু আহত

রাজধানীর হাজারীবাগে আজ সোমবার সকালে ককটেল বিস্ফোরণে তানিয়া (১০) নামের এক শিশু মারাত্মক আহত হয়েছে। শিশুটির ডান হাতের কবজি কেটে ফেলতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। সে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
শিশুটির বাবা মো. রশিদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, আজ সকালে তাঁর ছেলে আল আমিন (১১) হাজারীবাগ পার্ক মাঠ থেকে কালো টেপে মোড়ানো একটি বস্তু নিয়ে বাসায় ফেরে। টেপ ছাড়িয়ে সে একটি কৌটা দেখতে পায়। ছোট বোন তানিয়াকে কৌটাটি জানালা দিয়ে ফেলে দিতে বলে সে। জানালা দিয়ে ফেলে দেওয়ার সময় তানিয়ার হাতেই এটি বিস্ফোরিত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘শিশুটির ডান হাতের তিনটি আঙুলে কোনো রক্ত সঞ্চালন নেই। ওই হাতের কবজি থেঁতলে গেছে। আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটি ভালোভাবে ধুয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে কবজি কেটে ফেলতে হতে পারে। তাকে চিকিৎসা দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

২৩ ও ২৪ এপ্রিলের এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়েছে

হরতালের কারণে কাল মঙ্গলবার ও পরদিন বুধবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী কাল ২৩ এপ্রিলের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১১ মে। পরদিন ২৪ এপ্রিলের পরীক্ষা হবে ১০ মে।
আজ সোমবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান প্রথম আলো ডটকমকে এ তথ্য জানান।

Friday, April 19, 2013

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালীদের কাতারে আমির

বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা আমির খানের সাফল্যের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি পালক। আজ ১৯ এপ্রিল বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির নামের তালিকা প্রকাশ করেছে ঐতিহ্যবাহী ‘টাইম ম্যাগাজিন’। এই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’খ্যাত এ তারকার নাম।
‘টাইম ম্যাগাজিন’ শিল্প, সংস্কৃতি, রাজনীতি, ক্রীড়া, ব্যবসাসহ বিভিন্ন অঙ্গনে সাড়া জাগানো ব্যক্তিদের নিয়ে বার্ষিক এ তালিকা প্রস্তুত করেছে। ‘২০১৩ টাইম ১০০’ সংখ্যার জন্য বিশেষ সাতটি প্রচ্ছদও ছাপানো হয়েছে। সেগুলোর একটিতে ঠাঁই পেয়েছে আমিরের ছবি। আমিরের পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, চলচ্চিত্র তারকা ও সমাজকর্মী। তাঁকে ‘পথ প্রদর্শক’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়েছে। জানিয়েছে ‘ইন্দো-এশিয়ান নিউজ’।
টাইমডটকমে আমিরকে নিয়ে লিখেছেন অস্কারজয়ী ভারতীয় সংগীত পরিচালক এ আর রেহমান। আমির সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, ‘তারকা খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে সমাজের নানা ক্ষত সারানোর কাজে এগিয়ে এসেছেন আমির। তাঁর সম্মোহনী ক্ষমতা আছে। সব কাজে তাঁর জাদুকরি প্রভাবের কারণে কোনো অভিযোগ না তুলে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সবাই তাঁর কথা মেনে নেয়।’
রেহমান আরও লিখেছেন, ‘আমির তাঁর “সত্যমেভ জয়তে” অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরেছেন। সমাধানের পথ বাতলে দেওয়ার চেয়ে স্পর্শকাতর নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলাটাই ছিল এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। এমন কিছু সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যা তথাকথিত সভ্য সমাজে কেউ আলোচনা করারও সাহস দেখান না। অথচ অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে সবার সামনে সে সব প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন আমির। এর মধ্য দিয়ে তিনি একটি আন্দোলনের সূচনা করেছেন, যা ভারতীয়দের জীবনধারা পালটে দিতে সাহায্য করবে। জয় হো।’
বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির নামের তালিকায় আরও ঠাঁই পেয়েছেন পাকিস্তানের কিশোরী নারীশিক্ষা কর্মী মালালা ইউসুফজাই, হলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতা স্টিভেন স্পিলবার্গ, অভিনেতা ড্যানিয়েল ডে লুইস, অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্স, গায়ক ও অভিনেতা জাস্টিন টিমবারলেক, পপ গায়িকা বিয়ন্স নোলস ও তাঁর স্বামী র্যাপ সংগীতশিল্পী জে-জি, যুক্তরাজ্যের রাজবধূ কেট মিডলটন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেল ওবামা, মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি প্রমুখ।

চ্যানেল আইয়ে ‘টেলিভিশন’

টেলিভিশন ছবির টেলিভিশন-স্বত্ব কিনে নিল চ্যানেল আই। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর জানালেন, আগামী রোজার ঈদে ছবিটি চ্যানেল আইয়ে প্রচার করার পরিকল্পনা আছে তাঁদের। এ প্রসঙ্গে টেলিভিশন ছবির পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বললেন, ‘বেশ ভালো লাগছে। ঘরের ছেলের ছবি ঘরের টেলিভিশনে দেখা যাবে, ভালো তো।’ 
ফরিদুর রেজা সাগরের অনুভূতিও একই রকম, ‘ফারুকীর সব ছবিই আমাদের কাছে আছে। কেবল টেলিভিশন ছবিটি ছিল না। এবার সেটাও আমাদের ঘরে চলে এল। এতে করে আমাদের আর্কাইভ আরও সমৃদ্ধ হলো।’ 
উল্লেখ্য, টেলিভিশন ছবির মিডিয়া পার্টনার ছিল বাংলাভিশন।
এদিকে আরও চারটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যাচ্ছে টেলিভিশন। ফারুকী বললেন, ‘আগামী মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে এই চারটি চলচ্চিত্র উৎসব। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হবে জুন মাসে, জুলাই মাসে মেলবোর্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আর জুলাইয়ে টেলিভিশন যাবে লন্ডনের একটি চলচ্চিত্র উৎসবে।’

নিলামে ‘নগ্ন’ জোলি!


বার নিলামে উঠছেন হলিউডের অ্যাকশন ও রোমান্টিক হিরোইন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তাও আবার যেনতেন ভাবে নয়, একেবারে ‘নগ্ন’ জোলি। আগামী মে তে লন্ডনের ‘ক্রিস্টি অকশন হাউজ’-এ ছবিটি নিলামে উঠবে। ‘দ্যা সান অনলাইন’ জানিয়েছে, নিলামে ওঠা ছবিটিতে জোলিকে দেখা যাবে বিবসনা অবস্থায় একটি সাদা রঙের ঘোড়াকে আদর করতে।
 
মার্কিন অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি এ পর্যন্ত তিনবার গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, দুইবার স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার এবং একবার একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। চলচ্চিত্র জগতের বাইরে ২০০১ সালে তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার শুভেচ্ছাদূতও মনোনীত হযেছেন। বিশ্বব্যাপী মানবতার প্রচার, এবং বিশেষ করে শরণার্থীদের জন্য কাজ করার জন্য জোলি বিশেষভাবে সমাদৃত। একাধিকবার তিনি ‘বিশ্বের সেরা সুন্দরী’ নির্বাচিত হয়েছেন।

Wednesday, April 17, 2013

সিলিকন ভ্যালিতে প্রযুক্তি বিনিয়োগ সম্মেলন

যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে আগামী ৭ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বিতীয় ‘ইউএস-বাংলাদেশ টেক ইনভেস্টমেন্ট সামিট’। উদ্যোক্তা ও পেশাজীবীদের আন্তর্জাতিক সংগঠন দ্য ইনদাস এন্টারপ্রাইজের (টাই) সদর দপ্তরে হবে এই সম্মেলন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় এক হোটেলে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। 
প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগসংক্রান্ত এ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রায় ২০০ জন তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা, নীতিনির্ধারক, ঊর্ধ্বতন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করবেন। বাংলাদেশ থেকে এই সম্মেলনে প্রায় ৫০ জন তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা অংশ নিচ্ছেন। ২০১০ সালে নিউইয়র্কের ম্যারিয়ট হোটেলে প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বেসিসের সভাপতি এ কে এম ফাহিম মাশরুর, মহাসচিব রাসেল টি আহমেদ, সম্মেলনের আহ্বায়ক শামীম আহসান, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল হামিদ। 
বক্তারা জানান, আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি মেলার চেয়েও বিনিয়োগ সম্মেলনে দেশের ব্র্যান্ড ভাবমূর্তি তৈরির ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশি প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের জন্য প্রচুর পরিমাণে বি-টু-বি ম্যাচমেকিং ও যৌথ উদ্যোগে ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরির জন্যই এমন আয়োজন। সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া বক্তব্য দেবেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান মাইকেল হোন্ডা, সিটি অব সানিভেলের মেয়র অ্যান্থনি স্পিটলেরি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান, তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়, টাই-সিলিকন ভ্যালির প্রেসিডেন্ট ভেঙ্কটেশ শুক্লা, ইউএস প্যান আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের প্রধান নির্বাহী সুসান অ্যালেন, ইউএস-বাংলাদেশ পার্টনার্সের প্রধান নির্বাহী জয়েস মোইসহ অনেকে।
বেসিসের উদ্যোগে এবং দ্য ইনদাস এন্টারপ্রাইজ (টাই) ও অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের সহযোগিতায় হবে এই সম্মেলন। সহযোগী আয়োজক হিসেবে আছে ইউএস প্যান এশিয়ান চেম্বার অব কমার্স, ইউএস-বাংলাদেশ পার্টনার্স, আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার্স, নেটওয়ার্ক অব ইয়ং বাংলাদেশি-আমেরিকান প্রফেশনালস ও বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।

লাস ভেগাসের বাংলাদেশি ডাক্তার

ছাত্রজীবনে চৌধুরী হাফিজুল আহসান বরাবর তাঁর ক্লাসের অন্যতম সেরা ছাত্র বলে পরিচিত ছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেষ পরীক্ষায় স্বর্ণপদক তার প্রমাণ। ঢাকার পাট চুকিয়ে প্রথমে যুক্তরাজ্য ও পরে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা নিয়েছেন। সেখানেও তাঁর পরিচয় ছিল সেরা ছাত্র হিসেবে। ইংল্যান্ড থেকে প্রথমে এমআরসিপি, তারপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে আছেন ১৪ বছর ধরে। প্রথমে ফিলাডেলফিয়া, তারপর ক্যালিফোর্নিয়া, সবশেষে লাস ভেগাসে। যেখানেই গেছেন, সেরা চিকিৎসক হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন। সেরা তরুণ গবেষক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন আমেরিকান সোসাইটি অব ইকোকার্ডিওগ্রাফি ও আমেরিকান সোসাইটি অব নিউক্লিয়ার কার্ডিওলজি থেকে। ২০০৭ সাল থেকে তিনি নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনে অধ্যাপক ও হূদেরাগ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁরই নেতৃত্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হূদেরাগ কেন্দ্র আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের স্বর্ণপদক পুরস্কার পেয়েছে। মাত্র ৪৫ বছর বয়সে তাঁর এই সাফল্য ভাগ্যের অনুকম্পা নয়, কঠোর পরিশ্রম ও মেধার ফল, এ কথা তাঁর মার্কিন ও বাঙালি সহকর্মী ও বন্ধুরা সবাই মানেন।
এমন একজন সফল ও কীর্তিমান মানুষ, অথচ তাঁর সঙ্গে যখন কথা হলো, পুরোটা সময় ব্যয় করলেন বাংলাদেশ নিয়ে কী করা যায়, তাঁর সে ভাবনার কথা জানাতে। ‘দেখুন, আমি বাংলাদেশের মানুষ। পেশার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে থাকি বটে, কিন্তু মনের মধ্যে সারাক্ষণ থাকে বাংলাদেশ।’ টেলিফোনে বললেন ডা. হাফিজুল আহসান। সন্ধ্যাবেলা হাসপাতালে তাঁর নিয়মিত ‘রাউন্ড’ সেরে মাত্র ঘরে ফিরেছেন। সম্ভবত ক্লান্ত, কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে হূদেরাগ নিয়ে নতুন কী কী করা যায়, তার সবিস্তার বিবরণ দিলেন।
ডা. চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো হার্ট অ্যাটাক বা হূদ্-আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগনির্ণয় ও দ্রুত চিকিৎসার অভাব। এ দেশে মানে যুক্তরাষ্ট্রে, হার্ট অ্যাটাক হলে বন্ধ আর্টারি বা ধমনিতে রক্ত চলাচল পুনরুদ্ধার করাই হচ্ছে চিকিৎসার লক্ষ্য। এ কাজটা যদি ৯০ মিনিটের ভেতর করা যায়, তাহলে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে আসে। বাংলাদেশে সে কাজটা করা গেলে অনেক রোগীকে বাঁচানো সম্ভব।’
হার্ট অ্যাটাকের পরপরই হূদ্যন্ত্রের দুর্বলতা শুরু হয়, অনেক সময় হূদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এর নাম কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। হূদ্যন্ত্রের ছন্দপতন বা আকস্মিক বৈকল্যের আরেক নাম ভেন্ট্রিকিউলার অ্যারিদমিয়া। হূৎস্পন্দন দ্রুত স্বাভাবিক না হলে তার পরিণাম অবধারিত মৃত্যু। ডা. চৌধুরী জানালেন, ভেন্ট্রিকিউলার অ্যারিদমিয়া নিয়ন্ত্রণে আনা খুব কঠিন কোনো ব্যাপার নয়। এর জন্য যা দরকার তা হলো ‘ডিফাইব্রিলেটর’ নামের একটি যন্ত্র। খুব দুর্মূল্যের কোনো জিনিস নয়, পাওয়াও খুব দুষ্কর নয়। সমস্যা হলো আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ এ বিষয়ে যথেষ্ট অবহিত নয়। রোগের লক্ষণ বুঝে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে অনেক লোকের জীবন বাঁচানো সম্ভব। আর এই কাজটিই বাংলাদেশে একাধিক হাসপাতাল ও সেবাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একযোগে করার চেষ্টায় রয়েছেন ডা. চৌধুরী। ঢাকার ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল (বারডেম) ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন তাঁকে এ ব্যাপারে সমর্থন জোগাচ্ছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা বা অন্য বড় বড় শহরে কমবেশি চিকিৎসার সুযোগ আছে। গ্রামাঞ্চলে উন্নত মানের চিকিৎসকও নেই, চিকিৎসালয়ও নেই। অথচ এখন সবখানেই ঘরে ঘরে মুঠোফোন রয়েছে। অনেকের স্মার্টফোনও আছে। রোগীর অবস্থা জানিয়ে অথবা তাঁর হূদ্যন্ত্রের ইসিজি রিপোর্টটি যদি সেলফোনে দ্রুত যথাযথ স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে অবস্থার সুরাহা সম্ভব বলে মনে করেন এই চিকিৎসক। এ নিয়ে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে বারডেম তাঁকে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
‘যুক্তরাষ্ট্রে থাকি বা বাংলাদেশে, মানুষকে সাহায্য করার জন্য দরকার একধরনের মানসিকতা। একজন মানুষকেও যদি বাঁচাতে পারি, সেটাই হবে চিকিৎসক হিসেবে আমার সাফল্য,’ বললেন ডা. চৌধুরী।

Monday, April 15, 2013

নববর্ষে বিয়ে করলেন বিজরী-দিনা

সংগীতপরিচালক শওকত আলী ইমনের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পাঁচ মাসের মাথায় আবার বিয়ের কাজ সারলেন অভিনয়শিল্পী বিজরী বরকতউল্লাহ।
বর আরেক অভিনয়শিল্পী ইন্তেখাব দিনার। গতকাল রোববার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন সন্ধ্যায় ধানমন্ডির একটি রেস্তোরাঁয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন তাঁরা। এতে উভয় পরিবারের কাছের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বিয়ের পর আজ সোমবার প্রথম আলো ডটকমকে বিজরী বলেছেন, ‘ইমনের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে বিয়ের কথা উঠলে আমি ভাবলাম, বিয়ে যদি করতেই হয় তাহলে পরিচিত কাউকে করলেই ভালো হয়। দিনারের সঙ্গে আমার ১৪ বছরের বন্ধুত্ব। আমাদের দুজনের বোঝাপড়াও চমত্কার। আমার মেয়ে ঊর্বানাও তাঁকে খুব পছন্দ করে। তাই যখন বিয়ের সিদ্ধান্তটা নিলাম, তখন দিনারকে বেছে নিলাম।’
বিয়ে প্রসঙ্গে দিনার বললেন, ‘নাটকে অনেকবার দ্বিতীয় জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়েছি। বাস্তবে এটিই প্রথম। তাই অনুভূতিটা একেবারেই অন্য রকম।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ১৫ জুলাই ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন ইমন ও বিজরী।

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা নেবেন ড. ইউনূস

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল গ্রহণ করবেন। আগামী বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে এ সম্মাননা দেওয়া হবে। পদকটি গ্রহণের জন্য তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার জন বায়নারের কাছ থেকে ড. ইউনূস সম্মাননা গ্রহণ করবেন। এরপর কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে তিনি বক্তব্য দেবেন। তাঁর বক্তব্যে সামাজিক বাণিজ্য, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ও দারিদ্র্য দূরীকরণ-বিষয়ক ধারণা প্রাধান্য পাবে বলে ইউনূস সেন্টার সূত্র জানিয়েছে।
নিউইয়র্কের এক হোটেল থেকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এ সম্মাননা আমার ব্যক্তিগত নয়, বাংলাদেশের।’
মার্কিন কংগ্রেসের উভয় পক্ষের সম্মতিতে কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল দেওয়া হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে অর্জন ও অবদান বিবেচনা করে মার্কিন আইনপ্রণেতারা এ সম্মাননা দিয়ে থাকেন। ১৯৭৬ সালে প্রথমবারের মতো এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
মার্কিন কংগ্রেসে প্রথম কোনো বাংলাদেশির এমন সম্মানে প্রবাসীরা আনন্দিত। ড. ইউনূসই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা হিসেবে প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রথম দফা নির্বাচিত হওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ওই সম্মাননা দেন।
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিরা মনে করেন, বিশ্ব পরিস্থিতির বর্তমান সময়ে ড. ইউনূসের এ সম্মাননা প্রাপ্তি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।

Saturday, April 13, 2013

দশক জুড়ে প্রিয়ঙ্কা


দেখতে দেখতে বলিউডে হেসেখেলে দশটি বছর পার করে দিলেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া।
অবশ্য এই দশক জুড়ে যাত্রার মাঝেই নায়িকাকে নিয়ে বলিউড সরগরম হয়েছে বড় কম নয়।
বার বার অক্ষয কুমার আর শাহরুখ খান-এর সঙ্গে নাম জড়িয়ে তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে টিনসেল টাউন, কখনও বা অন্য নায়িকারা ঈর্ষাণ্বিত হয়েছেন তাঁর সাফল্যে।
তিনি অবশ্য এসবে খুব একটা কান দেননি, চুপচাপ নিজের কাজ করে আর পুরষ্কারে ঝুলি ভর্তি করে অব্যাহত রেখেছেন তাঁর বলিউড সফর।

শ্রীশান্তকে ছুরি মারেন ভাজ্জি!


শ্রীশান্ত আবার খবরে ফিরলেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই, এবারও ক্রিকেটীয় কারণে নয়। আইপিএলের ভরা মৌসুমে কেরালার এই পেসার এমন একটা বিতর্ক তুললেন যা নিয়ে বাজার গরম করা যায়। শ্রীশান্ত ঝুলি থেকে বের করলেন আইপিএলের চড় কাণ্ড (`স্ল্যাপ গেট` বিতর্ক)। পুরো ঘটনাটাই ছিল পূর্বপরিকল্পিত৷ বললেন, ও পিছনে থেকে ছুরি মারে। আর অন্য কেউ নয়, পিছন থেকে ছুরি মারার কাজটি করেছিলেন ভাজ্জি৷ সঙ্গে যোগ করেছেন, হরভজন তাঁকে চড় মারেননি৷ কিন্তু 'পিঠে ছুরি মেরেছিলেন'৷
 
বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুতে গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে প্রকাশ্য বিবাদে জড়িয়ে পড়েন বিরাট কোহলি। এই ঘটনায় যখন দেশের ক্রিকেটমহল সরগরম, তখনই পুরনো বিতর্ক ফিরিয়ে আনলেন শ্রীসান্থ।
 
আইপিএলের প্রথম মৌসুমে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে খেলা শ্রীসন্থকে চড় মেরেছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ন্সের হরভজন সিং। ভাজ্জির চড় খেয়ে মাঠেই শ্রীশান্ত কেঁদে ফেলছিলেন। এই চড় কাণ্ডের জেরে ভাজ্জিকে নির্বাসিত হতে হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বছর পর শ্রীসন্থ এখন উল্টো গাইছেন।
 
আজ টুইটারে শ্রীশান্ত লিখেছেন, সেদিন হরভজন তাঁকে চড় মারেননি। সেদিন একটা ঝামেলায় চড়ের মত কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে এরপর মারাত্মক অভিযোগ করছেন বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই সদস্য পেসার। শ্রীশান্ত বলেছেন, সেদিন তিনি ভাজ্জির সঙ্গে হাত মেলাতে গেছিলেন। কিন্তু হরভজন মেজাজ হারিয়ে তাঁকে কনুই দিয়ে আঘাত করেন বলে অভিযোগ শ্রীসান্থের। যথারীতি বলেছেন, পুরো অধ্যায়ের পিছনে তাঁর কোনও দোষ নেই।
 
এতদিন পরে কেন এই বিষয়ে মুখ খুলছেন। তার কারণ ব্যাখা করতে গিয়ে বলেছেন, `ভয় পেয়েছিলাম যদি এর ফলে দলে যদি নিজের ঠাঁই না পাই`।