অফিসের কাজের ফাঁকে উষ্ণ কফিতে সিপ মারতে মারতেই হোক বা সুক্তোয়
রাঁধুনি ফোড়ন দিতে দিতে, বাঙালি মনের আনাচে-কানাচে সবসময়ই যেন ঘুরতে থাকে
সেলেবদের রোজনামচা আর টক-ঝাল গসিপ! সুযোগ পেলেই বাঙালি হৃদয় ঘাঁটতে থাকে
প্রিয় তারকাদের হরেক প্রেম ঝগড়া-পরকীয়া; আরও কত কী নিয়ে ফিসফিসানি! এক কথায়
মাসিমা, দিদিমা থেকে সদ্য টিন-এজে পা দেওয়া কন্যে- তারকাদের জীবন গাথা,
দাম্পত্য, বিরহ নিয়ে একটা ছোটখাট আড্ডা জমাতে সকলেই ওস্তাদ। আর ভারতীয়
সিনেমার ১০০ বছর পূর্তিতে সেই গল্পও বেড়েছে বই কমেনি!
তবে এবার পরনিন্দা বা তারকাদের খুঁত খোঁজা ছেড়ে একটু ভেবে দেখুন তো ওঁদের
প্রেমের কথা; সেলেবদের সম্পর্ক সব সময়েই ঠুনকো হয় না। এমন অনেক সেলেবই আছেন
বলিউড জুড়ে, যাঁদের দাম্পত্য আমাদের ভালবাসায় আস্থা ফেরাতে শিখিয়েছে। ওঁরা
শিখিয়েছেন কীভাবে পড়তে হয় বার বার একই মানুষের সঙ্গে ছাপুছাপু প্রেমে।
ভাল-খারাপ সময়ের তোয়াক্কা না করেও হাতটি একে অপরের কত শক্ত করে ধরে থাকতে
হয়, তাও বোধহয় ওঁদের থেকে শিখে নিতে হবে। সেরকমই বলিউডি তারকাদের মধ্যে
থেকে বেছে নেওয়া ৫টি জুটির নাম বলব, যাঁরা কঠিন সময়কে হার মানালেও হারাতে
দেননি নিজেদের ভালবাসাটিকে।
তা, কারা এই সেরা ৫ বলিউডি লাভ বার্ড? কাদের প্রেমলীলাতেই বা অনুপ্রেরিত হবে এই প্রজন্মের ‘শর্ট টাইল’ সম্পর্কে বিশ্বাসী যুগলের দল?
শাহরুখ-গৌরী: মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রথম দেখা। সামান্য
রোজগারে শুরু হয় দিন চলা। প্রাথমিকভাবে ভিন্ন জাতের কারণে বিবাহে আসে প্রবল
বাধা গৌরীর পরিবার থেকে। বিয়ের প্রথমদিকে নাকি স্বামী শাহরুখের ছবি করাতে
ছিল গৌরীর ঘোর আপত্তি। দিল্লি ফিরে আসার জন্যে ছবি ভাল না চলুক- এমনটাও
নাকি চাইতেন তিনি। নিন্দুকেরা অবশ্য বলে, সে আপত্তি এখনও রয়েছে! নইলে কেন
স্বামীর সঙ্গে কাজ করা জনৈক নায়িকার বলিউডে কাজ পাওয়া বন্ধ করে দেবেন গৌরী!
যে যাই বলুক, প্রেমে মায়ায় শাহরুখই এখনও তাঁর আঁচলেই বাঁধা।
ঐশ্বর্য-অভিষেক: এই জুটির প্রথম ছবি ‘ঢাই অক্ষর প্রেম
কে’ তেমন সাফল্য পায়নি! সঙ্গে করা আরও কটা ছবিও বেশ ফ্লপ। কিন্তু বাস্তবে
প্রেম দানা বাঁধতে থাকে সবার অগোচরে। ‘বান্টি অউর বাবলি’র সেটে অ্যাশের
‘কজরা রে’ নাচের সময়ই তাঁকে অভি’র ভীষণ ভাল লেগে যায় হঠাৎ! বাকিটুকু তো
জানাই; ২০০৭-এ হয় এনগেজমেন্ট এবং সেই নিমন্ত্রণ-বিতর্ক জড়ানো বিয়ে! এখন
একটি খুকিও হয়েছে দম্পতির; মনের সুখে দিব্যি আছেন তাঁরা।
হৃত্বিক-সুজান : একটি ট্রাফিক সিগন্যালে প্রথম দেখেই
নায়ক প্রেমে পড়ে যান সুজানের। তারপর প্রথম ডেটে রেস্তোরাঁর বিল দিয়ে যখন
তাঁকে উদ্ধার করেন সুজান; তখন থেকেই নায়কের সব ভাল-মন্দের দায় চলে যায়
সুজানের হাতে! ২০০০ সালে গাঁটছড়া হয়ে গিয়েছে বাঁধা, তার পর দুটি ছেলে নিয়ে
কর্তা-গিন্নির সংসার এখন সুখের! মাঝে অবশ্য বারবারা মোরি নামের এক
বিদেশিনীর সঙ্গে খানিক ঝামেলা বাধিয়েছিলেন কর্তা; গিন্নি সে সমস্যাকে ফের
সাগরপারে পাঠিয়ে ফিরিয়ে এনেছেন সংসারে শান্তি। আর কী চাই?
স্যাফ-করিনা : ‘তশন’ ছবিটির সেটে সমুদ্র সৈকতে সান-বাথ
নিতে দেখে দুম করে নায়কের প্রতি ফিদা হয়ে যান করিনা। সেটেই তারপর চলতে থাকে
প্রেম। এক সময় নিয়মমাফিক বিয়েও হল। সেই সদ্য বিবাহের লাড্ডু খেয়ে এখন কি
পস্তাচ্ছেন তাঁরা? তা কেন হতে যাবে! বরং এখনই সব কাজ ছেড়ে সংসারে মন
দিয়েছেন কন্যে; গৃহকোণের সুখও বজায় আছে ষোল আনা!
অক্ষয়-টুইঙ্কল : একসঙ্গে একটি ছবি করতে গিয়ে দুজনের
প্রথম প্রেমে পড়া! নানান টালবাহানার পরে বিয়ে! হ্যাঁ, বিয়ের পরেই নাকি
অনেকটা শুধরে যান অক্ষয়, আর মন দেন না যে কোনও নায়িকাকে। তাছাড়া ওঁর লাকও
নাকি খুলে গিয়েছে সেই বিয়ের পর থেকেই।
কী ভাবছেন তাহলে? চারপাশে যখন বিয়ের ভাঙন নিয়ে এত তোলপাড়, তখন এই সেলেবদের সফল দাম্পত্য থেকে শেখার কিছু আছে বইকি!
No comments:
Post a Comment