একদিকে নতুন বিবাহিত জীবনের হাতছানি, অন্যদিকে দেশমাতৃকা। দেশের সন্ধিক্ষণে আফতাবুল কাদের বেছে নিলেন দেশমাতৃকাকেই। মহালছড়ি এলাকায় অবস্থানরত প্রতিরোধযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। সেখানে দুই কোম্পানি পাকিস্তানি কমান্ডো ও শত শত প্রশিক্ষিত মিজো মুক্তিযোদ্ধাদের তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। মুক্তিযোদ্ধারা অসীম সাহসের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো ও মিজোদের মোকাবিলা করতে থাকেন। প্রায় তিন ঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর তাঁদের গোলাবারুদ প্রায় শেষ হয়ে আসে। নতুন এই বিপর্যয়ে ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের এককভাবে সাহসী ও অনন্য ভূমিকা পালন করেন। নিজের জীবনের মায়া উপেক্ষা করে তিনি গোলাগুলির মধ্যেই দৌড়ে উঁচু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একটা এলএমজি নিয়ে অবস্থান নেন। তিনি এলএমজি দিয়ে একনাগাড়ে কভারিং গুলি করতে থাকেন। তাঁর এই দুঃসাহসিক ভূমিকা ও এলএমজির কার্যকর ফায়ারের কারণে প্রতিরোধযোদ্ধাদের বেশির ভাগই নিরাপদে পশ্চাদপসরণে সক্ষম হন। এমন সময় তিন-চারটি গুলি এসে লাগে আফতাবুল কাদেরের বুকে। গুলি তাঁর হূৎপিণ্ড ভেদ করে পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। এর পরও তিনি বেঁচে ছিলেন। মুমূর্ষু অবস্থাতেও গুলি করার চেষ্টা করেন। অস্ত্র থেকে হাত সরাননি।
খিজির আলী, বীর বিক্রম,গ্রাম: কার্তিকদিয়া, বাগেরহাট। যুদ্ধ করেন ৯ নম্বর সেক্টরে
আশাশুনি সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত। জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে। আশাশুনিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি ছিল। তাদের সঙ্গে ছিল বিপুলসংখ্যক রাজাকার। অক্টোবরের মাঝামাঝি মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ-কমান্ডোরা যৌথভাবে সেখানে আক্রমণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দলের নেতৃত্ব দেন খিজির আলী। দুদিন ধরে সেখানে যুদ্ধ হয়। প্রথম দিন সারা রাত যুদ্ধ চলে। পরদিন মুক্তিযোদ্ধারা পুনর্গঠিত হয়ে আবার পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করেন। এ দিন তাঁরা পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের ফাঁকি দিয়ে থানার ঘাটে ভাসমান ফেরি পন্টুনে কয়েকটি মাইন লাগান। মাইন বিস্ফোরণে গোটা ফেরিঘাট তছনছ হয়। শব্দে গোটা এলাকা প্রকম্পিত হয়ে পড়ে। লোহার পাত বিভিন্ন দিকে ছিটকে পড়ে। পানি ছোটখাটো পাহাড়ের রূপ নিয়ে ৩০-৪০ ফুট ওপরে ওঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের মধ্যে তীব্র ভীতি সৃষ্টি হয়। এ সময় দুঃসাহসী খিজির আলী দুই হাতে দুটি এলএমজি নিয়ে ঝড়ের বেগে গুলি করতে করতে থানার ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ দৃশ্য দেখে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা বিস্মিত ও হতভম্ব হয়ে পড়ে। তাঁর ভয়াল রণমূর্তি দেখে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা এতই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে যে তারা নিজ অস্ত্রশস্ত্র ফেলেই পালাতে থাকে। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা সহজেই আশাশুনি থানা দখল করেন। ১১ জন পাকিস্তানি সেনা ও ৪০ জন রাজাকার তাঁদের হাতে নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা অবশ্য বেশিক্ষণ আশাশুনি থানার দখল ধরে রাখতে পারেননি। পরদিন পাকিস্তানি হেলিকপ্টার বৃষ্টির মতো গুলি ও বোমা ফেলতে থাকে। তখন মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে যান।
শহীদ মো. আবু বকর, বীর বিক্রম, গুলশান, ঢাকা। ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য। শহীদ: তারিখ অজ্ঞাত
হোটেলের গাড়ি পার্কিংয়ে পৌঁছে আবু বকর ও সামাদ হোটেলের ভেতরে ঢোকেন। বাকি দুজন গাড়িতে স্টেনগান নিয়ে বসে থাকেন। হোটেল লাউঞ্জে মূল দরজা দিয়ে না ঢুকে ‘সুইস এয়ারের’ অফিস কক্ষের দরজা দিয়ে তাঁরা যান। এ ব্যাপারে সহায়তা করেন ওই অফিসেরই একজন। ব্রিফকেস হাতে বকর প্রসাধনকক্ষের একেবারে কোনার কক্ষে ঢুকে দরজা আটকে দেন। সামাদ বাইরে থাকেন কাভার হিসেবে। ভেতরে বকর টাইম বোমা চালু করে ব্রিফকেস রাখেন কমোডের পেছনে। তারপর দরজায় ছিটকিনি লাগিয়ে রেখেই দেয়াল টপকে বেরিয়ে আসেন। দুজন সোজা চলে যান অপেক্ষমাণ গাড়ির কাছে। গাড়িতে ওঠামাত্র দ্রুত সেটি বেরিয়ে যায়। ঠিক ৫৫ মিনিট পরই ঘটে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। হোটেলের লাউঞ্জ, শপিং আর্কেড ও আশপাশের কক্ষের কাচ টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে। ছিটকে যায় দরজা, ভেঙে পড়ে কক্ষের ভেতরের ও লাউঞ্জের লাগোয়া দেয়াল।
সাইদুল হক, বীর প্রতীক, গ্রাম: ঘাটিয়ারা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। যুদ্ধ করেন ২ নম্বর সেক্টরে
সব বাধা উপেক্ষা করে সাহসের সঙ্গে সাইদুল হক ও তাঁর সহযোদ্ধারা প্রচণ্ড আক্রমণ করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু করে। গোলাগুলিতে রাতের আকাশ লাল হয়ে ওঠে। প্রচণ্ড যুদ্ধ চলতে থাকে। শত্রুসেনাদের ওপর তাঁরা বিপুল বিক্রমে চড়াও হন। তাঁদের বিক্রমে পাকিস্তানি সেনারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে তারা কসবার পুরান বাজারের দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে কসবা রেলস্টেশন।
খিজির আলী, বীর বিক্রম,গ্রাম: কার্তিকদিয়া, বাগেরহাট। যুদ্ধ করেন ৯ নম্বর সেক্টরে
আশাশুনি সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত। জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে। আশাশুনিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি ছিল। তাদের সঙ্গে ছিল বিপুলসংখ্যক রাজাকার। অক্টোবরের মাঝামাঝি মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ-কমান্ডোরা যৌথভাবে সেখানে আক্রমণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দলের নেতৃত্ব দেন খিজির আলী। দুদিন ধরে সেখানে যুদ্ধ হয়। প্রথম দিন সারা রাত যুদ্ধ চলে। পরদিন মুক্তিযোদ্ধারা পুনর্গঠিত হয়ে আবার পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করেন। এ দিন তাঁরা পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের ফাঁকি দিয়ে থানার ঘাটে ভাসমান ফেরি পন্টুনে কয়েকটি মাইন লাগান। মাইন বিস্ফোরণে গোটা ফেরিঘাট তছনছ হয়। শব্দে গোটা এলাকা প্রকম্পিত হয়ে পড়ে। লোহার পাত বিভিন্ন দিকে ছিটকে পড়ে। পানি ছোটখাটো পাহাড়ের রূপ নিয়ে ৩০-৪০ ফুট ওপরে ওঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের মধ্যে তীব্র ভীতি সৃষ্টি হয়। এ সময় দুঃসাহসী খিজির আলী দুই হাতে দুটি এলএমজি নিয়ে ঝড়ের বেগে গুলি করতে করতে থানার ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ দৃশ্য দেখে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা বিস্মিত ও হতভম্ব হয়ে পড়ে। তাঁর ভয়াল রণমূর্তি দেখে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা এতই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে যে তারা নিজ অস্ত্রশস্ত্র ফেলেই পালাতে থাকে। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা সহজেই আশাশুনি থানা দখল করেন। ১১ জন পাকিস্তানি সেনা ও ৪০ জন রাজাকার তাঁদের হাতে নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা অবশ্য বেশিক্ষণ আশাশুনি থানার দখল ধরে রাখতে পারেননি। পরদিন পাকিস্তানি হেলিকপ্টার বৃষ্টির মতো গুলি ও বোমা ফেলতে থাকে। তখন মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে যান।
শহীদ মো. আবু বকর, বীর বিক্রম, গুলশান, ঢাকা। ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য। শহীদ: তারিখ অজ্ঞাত
হোটেলের গাড়ি পার্কিংয়ে পৌঁছে আবু বকর ও সামাদ হোটেলের ভেতরে ঢোকেন। বাকি দুজন গাড়িতে স্টেনগান নিয়ে বসে থাকেন। হোটেল লাউঞ্জে মূল দরজা দিয়ে না ঢুকে ‘সুইস এয়ারের’ অফিস কক্ষের দরজা দিয়ে তাঁরা যান। এ ব্যাপারে সহায়তা করেন ওই অফিসেরই একজন। ব্রিফকেস হাতে বকর প্রসাধনকক্ষের একেবারে কোনার কক্ষে ঢুকে দরজা আটকে দেন। সামাদ বাইরে থাকেন কাভার হিসেবে। ভেতরে বকর টাইম বোমা চালু করে ব্রিফকেস রাখেন কমোডের পেছনে। তারপর দরজায় ছিটকিনি লাগিয়ে রেখেই দেয়াল টপকে বেরিয়ে আসেন। দুজন সোজা চলে যান অপেক্ষমাণ গাড়ির কাছে। গাড়িতে ওঠামাত্র দ্রুত সেটি বেরিয়ে যায়। ঠিক ৫৫ মিনিট পরই ঘটে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। হোটেলের লাউঞ্জ, শপিং আর্কেড ও আশপাশের কক্ষের কাচ টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে। ছিটকে যায় দরজা, ভেঙে পড়ে কক্ষের ভেতরের ও লাউঞ্জের লাগোয়া দেয়াল।
সাইদুল হক, বীর প্রতীক, গ্রাম: ঘাটিয়ারা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। যুদ্ধ করেন ২ নম্বর সেক্টরে
সব বাধা উপেক্ষা করে সাহসের সঙ্গে সাইদুল হক ও তাঁর সহযোদ্ধারা প্রচণ্ড আক্রমণ করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু করে। গোলাগুলিতে রাতের আকাশ লাল হয়ে ওঠে। প্রচণ্ড যুদ্ধ চলতে থাকে। শত্রুসেনাদের ওপর তাঁরা বিপুল বিক্রমে চড়াও হন। তাঁদের বিক্রমে পাকিস্তানি সেনারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে তারা কসবার পুরান বাজারের দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে কসবা রেলস্টেশন।
No comments:
Post a Comment