পুলিশ বলছে, রানার
সন্ধান এখনো না পেলেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
বুধবার সকালে ধসে পড়া
নয় তলা ভবন রানা প্লাজার মালিক রানা যুবলীগের স্থানীয় নেতা।
নিজেকে পৌর যুবলীগের
জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হিসেবে তুলে ধরে রানা কিছুদিন আগেও সাভারে অনেক পোস্টার সাঁটিয়েছিলেন,
যাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদেরও ছবি রয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি
শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সংসদে বলেছেন, রানা যুবলীগের কমিটিতে নেই।
ভবন ধসে আড়াই শতাধিক
মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় শ্রম আদালতে রানার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়েছে। পুলিশ ও
রাজউক বাদী হয়ে মামলা করেছে দুটি।
ধসের সময় রানা ভবনেই
ছিলেন। জনতার রোষানল থেকে বাঁচাতে ধসের ঘণ্টা খানেক পর মুরাদ জং গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
এরপর থেকে রানাকে কোথায় দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়
সাভার বাজার রোডে রানার বাড়িতে গেলে সেখানে তার পরিবারের কাউকেই পাওয়া যায়নি।
তবে বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিতে কয়েকজনকে দেখা যায়, যারা
নিজেদের রানার কর্মচারী বলে পরিচয় দেন।
মালামাল কোথায় নেয়া
হচ্ছে- জানতে চাইলে এদের একজন বলেন, ““এ বিষয়ে বলতে মানা আছে।”
পুলিশের করা মামলায়
রানার সঙ্গে তার বাবা আব্দুল খালেককেও আসামি করা হয়েছে। খালেকও আত্মগোপনে রয়েছেন।
রানা ও তার বাবা কোথায়-
জানতে চাইলে কর্মচারীরা বলেন, তা তারা জানেন না।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রানাকে ধরতে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক দল অভিযানে
রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, রানাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
দেয়া হয়েছে।
সাভারে রানা প্লাজার ধ্বংস্তূপে চলছে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার
অভিযান শুরু হয়েছে।
সাভার মডেল থানার ওসি
মো. আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলা হওয়ার পর থেকেই আসামিদের
খুঁজছি।”
এদিকে রানাকে মদদ দেয়ার
অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সংসদ সদস্য মুরাদ জং সাংবাদিকদের বলেন, কাজেই তার প্রমাণ দেবেন
তিনি।
এদিকে যুবলীগের স্থানীয়
এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোহেল রানা দেশের
বাইরে পালানোর পরিকল্পনা করেছেন।
ধসে পড়া ভবনে মঙ্গলবার
রাতে ফাটল দেখা দিলেও তাতে গা করেননি রানা। তিনি তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সামান্য
আস্তর খসে পড়েছে মাত্র।
রানা প্লাজা ছাড়াও
বাজার রোডে রানাম মালিকানাধীন আরেকটি ভবন রয়েছে। ওই ভবনে বৃহস্পতিবার ফাটল দেখা দিলে
আতঙ্ক সৃষ্টি হয় ভবনের বাসিন্দাদের মধ্যে।
স্থানীয়রা জানায়, তেলের
ঘানির মালিকের ছেলে রানা রাজনৈতিক প্রভাবে অর্থশালী হয়ে ওঠেন।
বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদও বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সংখ্যালঘু
পরিবারের জমি দখল করে সোহেল রানা স্থানীয় সংসদ সদস্যের মদদে এই অননুমোদিত ভবনটি (রানা
প্লাজা) নির্মাণ করেছে।
“ক্ষমতাসীন দলে বলে প্রশাসনও তাদের ভয় পায়। তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি
ব্যবস্থা নেয়নি।”
No comments:
Post a Comment