Thursday, June 13, 2013

বাপ কা বেটা

জিয়া খানের আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন বলিউডের অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরজ পাঞ্চোলি। এ ঘটনার পরপরই প্রখ্যাত ভারতীয় কলামিস্ট ও ঔপন্যাসিক শোভা দে তাঁর ব্লগে সুরজ ও আদিত্যকে উদ্দেশ করে মন্তব্য করেছেন, ‘লাইক ফাদার, লাইক সান।’ এতে আদিত্য ভীষণ ক্ষুব্ধ হলেও তাঁর অতীতের কীর্তি ঘাঁটলে শোভা দের উক্তিকে খুব বেশি ভুল বলা যায় না।

কারণ, আদিত্যের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, পরকীয়া জড়ানোর পাশাপাশি কিশোরী ধর্ষণের মতো গুরুতর সব অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জিনিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

জীবনের শেষ চিঠিতে প্রেমিক সুরজের বিষয়ে নানা গুরুতর অভিযোগ করে গেছেন সদ্য প্রয়াত বলিউডের অভিনেত্রী জিয়া খান। সেগুলোর মধ্যে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের মতো বিষয়ও আছে। জিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও বয়সে ২০ বছরের বড় এক নারীর সঙ্গে প্রণয়ে জড়িয়ে পড়েন সুরজ। পাঞ্চোলি পরিবারে গয়না সরবরাহ করতেন ওই নারী। সুরজের অনেক অত্যাচার মুখ বুজে সইলেও প্রেমিকের কাছ থেকে প্রতারণার বিষয়টিকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি জিয়া।


৩ জুন রাতে পশ্চিম মুম্বাইয়ের জুহু বিচসংলগ্ন নিজ বাসায় ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ বেছে নেন তিনি। এভাবেই মাত্র ২৫ বছর বয়সে নিভে যায় উঠতি এই তারকা অভিনেত্রীর জীবনপ্রদীপ।

আশির দশকে বলিউডে যাত্রা শুরু করেছিলেন সুরজের বাবা আদিত্য পাঞ্চোলি। এখন পর্যন্ত বিতর্কিত নানা কাণ্ড ঘটিয়ে বেশ কয়েকবার মুখরোচক সব খবরের জোগান দিয়েছেন ৪৮ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেতা। বলাই বাহুল্য, এসব কীর্তির কারণে তিনি সমালোচিত হয়েছেন বিভিন্ন মহলে।


জিনিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদিত্য নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় বলিউডি অভিনেত্রী পূজা বেদির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। প্রেমিকা পূজা বেদির ১৫ বছর বয়সী কিশোরী কাজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল আদিত্যের বিরুদ্ধে।

২০০৬ সালে ‘গ্যাংস্টার’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছিল কঙ্গনা রানাউতের। ২২ বছরের ছোট কঙ্গনাকে প্রেমের জালে জড়িয়ে ফেলেন বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক আদিত্য। এমনকি জনসমক্ষে কঙ্গনার সঙ্গে থিতু হওয়ারও ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তাঁদের সে সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি।

জিয়া খানের মা রাবেয়া আমিন তাঁর মেয়ের আত্মহত্যার জন্য সুরজের পাশাপাশি তাঁর বাবা আদিত্য পাঞ্চোলিকেও দায়ী করেছেন।


এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আমার মেয়ে ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশ ছিল বলে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু সত্যিটা হলো, সুরজ ও তার বাবা আদিত্য পাঞ্চোলির কাছ থেকে অসহনীয় যন্ত্রণা পাওয়ার কারণেই আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে জিয়া।’



জিয়ার আত্মহত্যার এক দিন পর গত ৪ জুন সুরজের পাশাপাশি তাঁর বাবা আদিত্যকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল মুম্বাই পুলিশ। তিনি আরও বলেন, বাবার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দেখতে দেখতেই বেড়ে উঠেছে সুরজ পাঞ্চোলি। বেশির ভাগ সন্তানই তার বাবাকে আদর্শ হিসেবে মেনে নিতে চায়। সুরজও হয়তো তেমনটাই করেছে। সুরজের নৈতিক স্খলনের জন্য বাবা হিসেবে কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না আদিত্য।

No comments:

Post a Comment