Friday, June 7, 2013

ছেলের পক্ষ নিলেন আদিত্য পাঞ্চলি

লিউডের অভিনেত্রী জিয়া খান। সম্প্রতি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে তাঁর প্রেমিক সুরজ পাঞ্চলিকে। মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে জিয়া সর্বশেষ ফোনে কথা বলেছিলেন তাঁর সঙ্গে। এ জন্য পুলিশি জেরার মুখেও পড়তে হয়েছে সুরজকে। কিন্তু সুরজের কোনো দোষ নেই বলেই মত দিয়েছেন তাঁর বাবা ও বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চলি। সম্প্রতি ছেলের পক্ষ নিয়েই কথা বলেছেন এ তারকা অভিনেতা।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় আদিত্য বলেন, ‘সুরজ কী দোষ করেছে? অহেতুক কেন তাকে এ ধরনের অপবাদ দেওয়া হচ্ছে? চমত্কার একটি আবেগের নাম হলো ভালোবাসা। নানা কারণে সুন্দর এই সম্পর্কে দুর্যোগের ঘনঘটা আসতেই পারে। হিন্দি চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকের জীবনেই এমনটা ঘটেছে।’ জানিয়েছে ওয়ান ইন্ডিয়া।
আদিত্য আরও বলেন, ‘প্রেমের সম্পর্কে টানাপোড়েনের জন্য কখনোই একপক্ষকে দায়ী করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে একপেশে রায় দেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। জিয়ার মৃত্যুতে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছে সুরজ। সে গভীরভাবে মর্মাহত। শুধু সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণেই জিয়া আত্মহত্যা করেছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তার এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে অন্য কারণও থাকতে পারে।’
বলিউডের উঠতি অভিনেত্রী জিয়া খান জুহু বিচসংলগ্ন নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন ৩ জুন, সোমবার রাতে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গলায় ফাঁস লাগানোর কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন জিয়া। অনাকাঙ্ক্ষিত এ মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে মুম্বাই পুলিশ জিয়ার আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও সহকারীদের পাশাপাশি তাঁর প্রেমিক সুরজকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

বলিউডে ডুবন্ত ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক দিন থেকেই হতাশায় ভুগছিলেন জিয়া খান। আট মাস আগে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কবজির রগ কেটে মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করলেও, সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন এই তারকা অভিনেত্রী। তাঁর শয়নকক্ষে ভেষজ ঘুমের বড়িও খুঁজে পেয়েছিল পুলিশ।
জিয়া খান শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম অভিনয় করেছিলেন ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দিল সে’ ছবিতে। এরপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০০৭ সালে অভিনয় করেন রাম গোপাল ভার্মার ‘নিঃশব্দ’ ছবিতে। ছবিটিতে অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে অভিনয় করে সবার নজর কাড়েন জিয়া। পরে অভিনয় করেন ‘গজনি’ ও ‘হাউসফুল’ ছবিতে। ২৫ বছর বয়সী জিয়া খানের বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যে। কিছুদিন আগে মা রাবেয়া আমিনের সঙ্গে যুক্তরাজ্য থেকে মুম্বাইয়ে চলে আসেন তিনি। থাকতেন জুহু বিচসংলগ্ন সাগর সংগীত নামের একটি ফ্ল্যাটে।
সম্প্রতি জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর ‘নিঃশব্দ’ ছবির প্রযোজক ও পরিচালক রাম গোপাল ভার্মা এক টুইটার বার্তায় লেখেন, ‘জিয়া “নিঃশব্দ” ছবিতে অনবদ্য অভিনয় উপহার দিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছিল। তাঁর অভিনীত “গজনি” (২০০৮) এবং “হাউসফুল” (২০১০) ছবিগুলোও সাফল্যের মুখ দেখে। তার পরও তিন বছর ধরে তাঁর হাতে কোনো কাজ ছিল না।’

ভার্মা আরও লিখেছেন, ‘আমি ঠিক জানি না, জিয়ার ক্ষেত্রে কেন এমনটা ঘটেছিল। বিষয়টি নিয়ে তিনি দারুণ হতাশায় ভুগছিলেন। নিজের ভবিষ্যত্ নিয়ে প্রচণ্ড শঙ্কিত ছিলেন জিয়া। তাঁর সঙ্গে আমার সর্বশেষ সাক্ষাতের সময় তিনি বলেছিলেন, আশপাশের সবার সাফল্য দেখে নিজেকে চরম ব্যর্থ মনে করছেন তিনি।’

No comments:

Post a Comment