হাস্য-রসাত্মক অভিনয়ের মাধ্যমে অন্যায়-অনিয়ম তুলে ধরে সামরিক জান্তাকে খোঁচা দেওয়ায় তাদের রোষানলে পড়েছিলেন মিয়ানমারের গোঁফধারী তিন ভাই। এ জন্য দুই ভাইকে চড়া মাসুলও দিতে হয়েছিল। কারাগারে কঠিন সাজা ভোগ করতে হয়েছে তাঁদের।
এখন জান্তা নেই। আছে জান্তাসমর্থিত নির্বাচিত বেসামরিক সরকার। তিন ভাইয়ের ওই দুজনও এখন আর কারাগারে নেই। কিন্তু অনিয়ম-অসংগতির প্রতি ব্যঙ্গাত্মক তির তাঁরা ছাড়তে নারাজ। সেই তিনি হোন না কেউকেটা, বয়েই গেছে তাঁদের।
এই তিন ভাই—পার পার লে (৬৪), তাঁর সহোদর লু মাও (৬২) ও চাচাতো ভাই লু ঝাউয়ের (৬০) কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে বিবিসি অনলাইনে। তাঁরা ‘মোছুয়া ভাই’ নামেও পরিচিত। মিয়ানমারের দ্বিতীয় বড় শহর মান্দালয়ে গান ও কৌতুকাভিনয়ের মাধ্যমে তাঁরা গড়ে তুলেছেন অন্য রকম এক প্রতিষ্ঠান।
তিন ভাই কৌতুকের মাধ্যমে সাবেক সামরিক জান্তার কর্মকাণ্ড লোকজনের সামনে তুলে ধরে আনন্দ দিতেন। তাঁদের এই কর্মকাণ্ড সহ্য করতে পারেনি জান্তা সরকার। ১৯৯৬ সালে অং সান সু চির বাড়ির বাইরে সামরিক জান্তাকে ব্যঙ্গ করে প্রদর্শনী করার দায়ে পার লে ও তাঁর চাচাতো ভাই লু ঝাউকে কারাগারে পাঠানো হয়। লু মাও অবশ্য কারাদণ্ড এড়াতে সক্ষম হন।
২০০৩ সালে দুই ভাইকে মুক্তি দেওয়া হলেও বাড়ির বাইরে তাঁদের অনুষ্ঠান করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দেশে এখন বেসামরিক সরকার থাকলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান করার কথা বলা হলেও তা এত জটিল যে শেষ পর্যন্ত আর অনুমতি নেওয়া সম্ভব হয় না।
কারাগারের সেই দিনগুলোর স্মৃতিচারণা করে পার লে বলেন, ‘আমি যা করেছিলাম, তা হলো কৌতুকের মাধ্যমে মজা করা। এ জন্য আমাকে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আমি সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিনি, কিন্তু আমাকে রাজনৈতিক অপরাধের মামলায় শাস্তি দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘কারাগারের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। হাতকড়া লাগিয়ে রাখা হতো, পাথরও ভাঙতে হয়েছে। কয়েদিদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার থাকত না। কোনো নিরাপত্তারক্ষী কারও ওপর রুষ্ট হলে তাকে গুলি করে মেরে ফেলত। আমি আমার চোখের সামনে এগুলো হতে দেখেছি। এসব ঘটনা মনে পড়লে এখনো খারাপ লাগে।’
এখন নিজেদের বাড়ির নিচতলায় ফাঁকা দোকানে অল্পসংখ্যক বিদেশি দর্শকের সামনে কৌতুক দেখান তিন ভাই। তাঁদের অভিনয়, কৌতুক আর গানে উঠে আসে সামরিক জান্তার অত্যাচার-নিপীড়নের নানা চিত্র।
এখন এই পর্যটন মৌসুমে তিন ভাইয়ের আয় মন্দ নয়। পর্যটকদের কাছ থেকে ১০ ডলার করে নেন তাঁরা। এতে রাতের একেকটি প্রদর্শনীতে গড়ে ৩০০ ডলার করে আসে।
তিন ভাইয়ের কাছে বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, দেশে তো এখন বেসামরিক সরকার, তাহলে এই কৌতুকের যৌক্তিকতা কী। এর জবাবে লু মাও সামরিক শাসন থেকে বেসামরিক শাসনব্যবস্থার দিকে যাওয়ার এই প্রক্রিয়াকে সাপের খোলস বদলানোর সঙ্গে তুলনা করেন। কারণ, শেষ পর্যন্ত সেটা সাপই থাকে। উদাহরণ হিসেবে তাঁদের বাইরে প্রদর্শনী করতে না দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
লু মাও আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে বিদ্যমান সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা এখনো অবৈতনিক নয়, বিদ্যুত্-সংকট চলছে, হাসপাতালে ওষুধ নেই, অনেকে এইচআইভিতে মারা যাচ্ছে; অথচ সরকার কিছুই বলছে না। সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত।’
লু মাও জানান, সু চি প্রেসিডেন্ট না হওয়া পর্যন্ত এই কৌতুকের অনুষ্ঠান চালিয়ে যাবেন তিনি। অবসরে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কৌতুক আমাদের রক্তে মিশে আছে। আমার দাদা ও বাবা কৌতুকাভিনেতা ছিলেন। আমার কৌতুক বলতে ভালো লাগে। আমি চাই মানুষ হাসিখুশি থাকুক। আমার বয়স হলেও আমি যখন প্রদর্শনী করি, তখন নিজেকে তরুণ লাগে।’
এখন জান্তা নেই। আছে জান্তাসমর্থিত নির্বাচিত বেসামরিক সরকার। তিন ভাইয়ের ওই দুজনও এখন আর কারাগারে নেই। কিন্তু অনিয়ম-অসংগতির প্রতি ব্যঙ্গাত্মক তির তাঁরা ছাড়তে নারাজ। সেই তিনি হোন না কেউকেটা, বয়েই গেছে তাঁদের।
এই তিন ভাই—পার পার লে (৬৪), তাঁর সহোদর লু মাও (৬২) ও চাচাতো ভাই লু ঝাউয়ের (৬০) কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে বিবিসি অনলাইনে। তাঁরা ‘মোছুয়া ভাই’ নামেও পরিচিত। মিয়ানমারের দ্বিতীয় বড় শহর মান্দালয়ে গান ও কৌতুকাভিনয়ের মাধ্যমে তাঁরা গড়ে তুলেছেন অন্য রকম এক প্রতিষ্ঠান।
তিন ভাই কৌতুকের মাধ্যমে সাবেক সামরিক জান্তার কর্মকাণ্ড লোকজনের সামনে তুলে ধরে আনন্দ দিতেন। তাঁদের এই কর্মকাণ্ড সহ্য করতে পারেনি জান্তা সরকার। ১৯৯৬ সালে অং সান সু চির বাড়ির বাইরে সামরিক জান্তাকে ব্যঙ্গ করে প্রদর্শনী করার দায়ে পার লে ও তাঁর চাচাতো ভাই লু ঝাউকে কারাগারে পাঠানো হয়। লু মাও অবশ্য কারাদণ্ড এড়াতে সক্ষম হন।
২০০৩ সালে দুই ভাইকে মুক্তি দেওয়া হলেও বাড়ির বাইরে তাঁদের অনুষ্ঠান করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দেশে এখন বেসামরিক সরকার থাকলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান করার কথা বলা হলেও তা এত জটিল যে শেষ পর্যন্ত আর অনুমতি নেওয়া সম্ভব হয় না।
কারাগারের সেই দিনগুলোর স্মৃতিচারণা করে পার লে বলেন, ‘আমি যা করেছিলাম, তা হলো কৌতুকের মাধ্যমে মজা করা। এ জন্য আমাকে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আমি সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিনি, কিন্তু আমাকে রাজনৈতিক অপরাধের মামলায় শাস্তি দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘কারাগারের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। হাতকড়া লাগিয়ে রাখা হতো, পাথরও ভাঙতে হয়েছে। কয়েদিদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার থাকত না। কোনো নিরাপত্তারক্ষী কারও ওপর রুষ্ট হলে তাকে গুলি করে মেরে ফেলত। আমি আমার চোখের সামনে এগুলো হতে দেখেছি। এসব ঘটনা মনে পড়লে এখনো খারাপ লাগে।’
এখন নিজেদের বাড়ির নিচতলায় ফাঁকা দোকানে অল্পসংখ্যক বিদেশি দর্শকের সামনে কৌতুক দেখান তিন ভাই। তাঁদের অভিনয়, কৌতুক আর গানে উঠে আসে সামরিক জান্তার অত্যাচার-নিপীড়নের নানা চিত্র।
এখন এই পর্যটন মৌসুমে তিন ভাইয়ের আয় মন্দ নয়। পর্যটকদের কাছ থেকে ১০ ডলার করে নেন তাঁরা। এতে রাতের একেকটি প্রদর্শনীতে গড়ে ৩০০ ডলার করে আসে।
তিন ভাইয়ের কাছে বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, দেশে তো এখন বেসামরিক সরকার, তাহলে এই কৌতুকের যৌক্তিকতা কী। এর জবাবে লু মাও সামরিক শাসন থেকে বেসামরিক শাসনব্যবস্থার দিকে যাওয়ার এই প্রক্রিয়াকে সাপের খোলস বদলানোর সঙ্গে তুলনা করেন। কারণ, শেষ পর্যন্ত সেটা সাপই থাকে। উদাহরণ হিসেবে তাঁদের বাইরে প্রদর্শনী করতে না দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
লু মাও আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে বিদ্যমান সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা এখনো অবৈতনিক নয়, বিদ্যুত্-সংকট চলছে, হাসপাতালে ওষুধ নেই, অনেকে এইচআইভিতে মারা যাচ্ছে; অথচ সরকার কিছুই বলছে না। সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত।’
লু মাও জানান, সু চি প্রেসিডেন্ট না হওয়া পর্যন্ত এই কৌতুকের অনুষ্ঠান চালিয়ে যাবেন তিনি। অবসরে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কৌতুক আমাদের রক্তে মিশে আছে। আমার দাদা ও বাবা কৌতুকাভিনেতা ছিলেন। আমার কৌতুক বলতে ভালো লাগে। আমি চাই মানুষ হাসিখুশি থাকুক। আমার বয়স হলেও আমি যখন প্রদর্শনী করি, তখন নিজেকে তরুণ লাগে।’
No comments:
Post a Comment