দেশে সমুদ্রবক্ষের একমাত্র চালু গ্যাসক্ষেত্র সাঙ্গু শেষ অবস্থায় উপনীত হয়েছে। এই গ্যাসক্ষেত্রের উত্পাদন কমতে কমতে এক কোটি (১০ মিলিয়ন) ঘনফুটের কাছাকাছি নেমেছে। ফলে বন্দরনগর চট্টগ্রামে গ্যাসসংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের পরিচালক অস্ট্রেলীয় কোম্পানি স্যান্তোস ও সরকারি সূত্র জানায়, দৈনিক এক কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন আর্থিকভাবে লাভজনক নয়। তার পরও চট্টগ্রামে গ্যাসের সংকট বিবেচনায় উত্তোলন অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে কূপে গ্যাসের চাপ ও উত্তোলনের পরিমাণ ক্রমেই কমছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, সাঙ্গু নিয়ে আর কোনো আশা নেই। ক্ষেত্রটি যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যাবে। তবে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ১৭ নম্বর কূপের খননকাজ প্রায় শেষ করে এনেছে বাপেক্স। সেখান থেকে চট্টগ্রামে প্রায় দুই কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে।
চট্টগ্রামে বর্তমানে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৪০ কোটি ঘনফুট। সরবরাহ করা হচ্ছে এর অর্ধেকের মতো।
দেশের ১৬ নম্বর ব্লকের সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রটি উত্পাদন অংশীদারি চুক্তির (পিএসসি) মাধ্যমে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্রিটিশ কোম্পানি কেয়ার্ন এনার্জি পিএলসিকে। ১৯৯৬ সালে তারা সেখানে গ্যাস আবিষ্কার করে। ১৯৯৮ সালের ১২ জুন এই ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ শুরু হয়।
পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাঙ্গুর মজুদ নির্ধারণ নিয়ে কেয়ার্ন শুরু থেকেই বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আসছে। ১৯৯৭ সালে তারা মজুদের পরিমাণ জানায় ৮৪৮ বিসিএফ। ১৯৯৮ সালে আরেকটি হিসাব করে জানায় সেখানে গ্যাস আছে এক হাজার ১০৩ বিসিএফ। শেষ পর্যন্ত সাঙ্গুর মজুদ ৯৩৫ বিসিএফ বলে পেট্রোবাংলা ও কেয়ার্ন দুই পক্ষই মেনে নেয়। এই হিসাবের ভিত্তিতেই গ্যাস তোলা হচ্ছিল।
কিন্তু গ্যাসের স্বাভাবিক চাপ না থাকায় কেয়ার্ন ২০০৫ সালে মজুদ পুনর্নির্ধারণ করে জানায়, সাঙ্গুতে গ্যাসের মজুদ ৭২৮ বিসিএফ। ২০০৬ সালে জানায় ৫১৬ বিসিএফ। ২০০৭ সালে বলে ৪৪৫ বিসিএফ। ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে জানায়, সাঙ্গুতে মোট গ্যাস মজুদ আছে ৪৫৬ বিসিএফ। ১৯৯৮ সাল থেকে তোলার পর ওই সময় অবশিষ্ট ছিল মাত্র ১৪ দশমিক ৪৪ বিসিএফ। এই পর্যায়ে কমপ্রেসর বসিয়ে উত্পাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও তেমন ফল পাওয়া যায়নি। তবে কমপ্রেসর বসানোর খরচ তুলে নেওয়ার জন্য কোম্পানিটি গ্যাসের বর্ধিত অংশ ঠিকই নিয়েছে।
২০১০ সালে কেয়ার্ন সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের পরিচালনভার স্যান্তোসের কাছে হস্তান্তর করে চলে যায়। স্যান্তোস নতুন করে ভূ-কম্পন জরিপ ও তিনটি কূপ খনন করে। কিন্তু বড় কোনো মজুদের সন্ধান পায়নি তারা। তবে বাড়তি ব্যয়ের জন্য তৃতীয় পক্ষের কাছে সরাসরি গ্যাস বিক্রির জন্য তাদের অনুমোদন দেয় সরকার। এই অবস্থায় স্যান্তোস সাঙ্গুর তখনকার কূপটি বন্ধ করে দিয়ে সাঙ্গু-১১ নামে নতুন একটি কূপ খনন করে গ্যাস সরবরাহ করছিল। কিন্তু কোনো চেষ্টাতেই সাঙ্গুর শেষ রক্ষা হলো না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কয়েকজন অধ্যাপক প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের প্রায় সব কটি গ্যাসক্ষেত্রেই গ্যাসের আধার (রিজার্ভার) হচ্ছে বালিকণাসমৃদ্ধ (স্যান্ডস্টোন)। নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ গ্যাস তুলতে গেলে ক্ষেত্রের ভেতরে যে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়, তাতে আধারের কাঠামো ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে যতটা গ্যাস পাওয়ার কথা, ততটা পাওয়া যায় না। সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রে এটাই ঘটেছে।
সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের পরিচালক অস্ট্রেলীয় কোম্পানি স্যান্তোস ও সরকারি সূত্র জানায়, দৈনিক এক কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন আর্থিকভাবে লাভজনক নয়। তার পরও চট্টগ্রামে গ্যাসের সংকট বিবেচনায় উত্তোলন অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে কূপে গ্যাসের চাপ ও উত্তোলনের পরিমাণ ক্রমেই কমছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, সাঙ্গু নিয়ে আর কোনো আশা নেই। ক্ষেত্রটি যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যাবে। তবে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ১৭ নম্বর কূপের খননকাজ প্রায় শেষ করে এনেছে বাপেক্স। সেখান থেকে চট্টগ্রামে প্রায় দুই কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে।
চট্টগ্রামে বর্তমানে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৪০ কোটি ঘনফুট। সরবরাহ করা হচ্ছে এর অর্ধেকের মতো।
দেশের ১৬ নম্বর ব্লকের সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রটি উত্পাদন অংশীদারি চুক্তির (পিএসসি) মাধ্যমে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্রিটিশ কোম্পানি কেয়ার্ন এনার্জি পিএলসিকে। ১৯৯৬ সালে তারা সেখানে গ্যাস আবিষ্কার করে। ১৯৯৮ সালের ১২ জুন এই ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ শুরু হয়।
পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাঙ্গুর মজুদ নির্ধারণ নিয়ে কেয়ার্ন শুরু থেকেই বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আসছে। ১৯৯৭ সালে তারা মজুদের পরিমাণ জানায় ৮৪৮ বিসিএফ। ১৯৯৮ সালে আরেকটি হিসাব করে জানায় সেখানে গ্যাস আছে এক হাজার ১০৩ বিসিএফ। শেষ পর্যন্ত সাঙ্গুর মজুদ ৯৩৫ বিসিএফ বলে পেট্রোবাংলা ও কেয়ার্ন দুই পক্ষই মেনে নেয়। এই হিসাবের ভিত্তিতেই গ্যাস তোলা হচ্ছিল।
কিন্তু গ্যাসের স্বাভাবিক চাপ না থাকায় কেয়ার্ন ২০০৫ সালে মজুদ পুনর্নির্ধারণ করে জানায়, সাঙ্গুতে গ্যাসের মজুদ ৭২৮ বিসিএফ। ২০০৬ সালে জানায় ৫১৬ বিসিএফ। ২০০৭ সালে বলে ৪৪৫ বিসিএফ। ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে জানায়, সাঙ্গুতে মোট গ্যাস মজুদ আছে ৪৫৬ বিসিএফ। ১৯৯৮ সাল থেকে তোলার পর ওই সময় অবশিষ্ট ছিল মাত্র ১৪ দশমিক ৪৪ বিসিএফ। এই পর্যায়ে কমপ্রেসর বসিয়ে উত্পাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও তেমন ফল পাওয়া যায়নি। তবে কমপ্রেসর বসানোর খরচ তুলে নেওয়ার জন্য কোম্পানিটি গ্যাসের বর্ধিত অংশ ঠিকই নিয়েছে।
২০১০ সালে কেয়ার্ন সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের পরিচালনভার স্যান্তোসের কাছে হস্তান্তর করে চলে যায়। স্যান্তোস নতুন করে ভূ-কম্পন জরিপ ও তিনটি কূপ খনন করে। কিন্তু বড় কোনো মজুদের সন্ধান পায়নি তারা। তবে বাড়তি ব্যয়ের জন্য তৃতীয় পক্ষের কাছে সরাসরি গ্যাস বিক্রির জন্য তাদের অনুমোদন দেয় সরকার। এই অবস্থায় স্যান্তোস সাঙ্গুর তখনকার কূপটি বন্ধ করে দিয়ে সাঙ্গু-১১ নামে নতুন একটি কূপ খনন করে গ্যাস সরবরাহ করছিল। কিন্তু কোনো চেষ্টাতেই সাঙ্গুর শেষ রক্ষা হলো না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কয়েকজন অধ্যাপক প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের প্রায় সব কটি গ্যাসক্ষেত্রেই গ্যাসের আধার (রিজার্ভার) হচ্ছে বালিকণাসমৃদ্ধ (স্যান্ডস্টোন)। নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ গ্যাস তুলতে গেলে ক্ষেত্রের ভেতরে যে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়, তাতে আধারের কাঠামো ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে যতটা গ্যাস পাওয়ার কথা, ততটা পাওয়া যায় না। সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রে এটাই ঘটেছে।
No comments:
Post a Comment