Wednesday, January 9, 2013

আদর্শ কেজি বাটখারার ভর বাড়ছে!


ভর পরিমাপের একক কিলোগ্রাম (কেজি) নির্ণয়ে যে বাটখারাটি মূল নমুনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেটির ভর ক্রমশ বেড়ে চলেছে। অর্থাৎ আমরা সবাই কিছুটা হালকা হচ্ছি। এক কেজি বলতে আগে যে পরিমাণ বস্তু কিনতাম, এখন সে তুলনায় কিছুটা হলেও কম পাচ্ছি। যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইন্টারন্যাশনাল প্রোটোটাইপ কিলোগ্রাম (আইপিকে) নামে পরিচিত ওই আদর্শ কেজি বাটখারাটির প্রচলন ১৮৭৫ সাল থেকে শুরু। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাটখারাটি তখনকার তুলনায় এখন কিছুটা ভারী। প্লাটিনামের তৈরি আদর্শ বাটখারাটিতে বছরের পর বছর ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা যুক্ত হয়ে এমনটা ঘটেছে। শিল্পায়ন ও মানুষের আধুনিক জীবনযাত্রার কারণে এই দূষণ হয়েছে। পরিণামে গত ১৩৭ বছরে বাটখারাটির ভর ১০ মাইক্রোগ্রাম বেড়েছে।
দেশলাইয়ের বাক্স আকৃতির আসল আইপিকে বাটখারাটি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ওজন ও পরিমাপ দপ্তরে রাখা হয়েছে। ১৮৮৪ সালে বাটখারাটির হুবহু আদলে (রেপ্লিকা) আরও ৪০টি বাটখারা তৈরি করে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। ভর নির্ণয়ের আদর্শ পরিমাপের জন্য ওই রেপ্লিকাগুলো ব্যবহার করা হয়। গবেষকেরা জানান, প্রতিটি রেপ্লিকার ভর সামান্য হলেও পরিবর্তিত হয়েছে। এতে পরিমাপের আদর্শ মান বজায় রাখার ওপর প্রভাব পড়ছে। 
আইপিকের রেপ্লিকায় দূষণ নির্ণয়ের জন্য অধ্যাপক পিটার কাম্পসন ও নাওকো সানো বিশ্বের একমাত্র এক্স-রে ফটোইলেট্রন স্পেকট্রোস্কপি (এক্সপিএক্স) যন্ত্রটি ব্যবহার করেন। তাঁরা ওই বাটখারায় হাইড্রোকার্বন সঞ্চিত হওয়ার চিহ্ন খুঁজে পান। মেট্রোলোজিয়া সাময়িকীতে ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। 
অধ্যাপক কাম্পসন বলেন, আইপিকের ভর যা-ই হোক না কেন, আইন অনুযায়ী এটিই কেজির আসল পরিমাপ। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ভর পরিমাপের ক্ষেত্রে সামান্য তারতম্য হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে সংরক্ষিত ৪০টি আইপিকে রেপ্লিকাগুলো ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা নির্দেশ করছে। মূল বাটখারার সঙ্গে এসব মাত্রার পার্থক্য তৈরি হচ্ছে। এই পার্থক্য অতি সামান্য বা সূক্ষ্ম হলেও গোটা বিশ্বের সার্বিক পরিমাপ বিবেচনায় অনেক বড়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অতি মূল্যবান বস্তুও রয়েছে, যার ভর সর্বশেষ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত পরিমাপ করতে হয়। কাজেই বিষয়টি হালকা ভেবে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। টেলিগ্রাফ।

No comments:

Post a Comment