‘এই দিনটার জন্য আল্লাহ আমারে বাঁচাইয়া রাখছে। আমগর স্বামী-সন্তানদের যেভাবে মারছে তার বিচার অইছে।’ কথাগুলো বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন বিধবা হাফিজা খাতুন। গতকাল বৃহস্পতিবার একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
হাফিজা খাতুনের বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের বেনুপাড়ায়। যা এখন বিধবাপল্লি নামে পরিচিত। একাত্তরের ২৫ জুলাই আলবদর, রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনী নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল সেখানে। বেনুপাড়ার সব পুরুষ মানুষকেই (১৮৭ জন) হত্যা করে পাড়াটিকে পরিণত করা হয়েছিল বিধবাপল্লিতে। সেদিন যে ৫৭ জন বিধবা হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে হাফিজাসহ ৩১ জন বেঁচে আছেন।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগের মধ্যে তৃতীয় অভিযোগ হলো সোহাগপুরে হত্যাযজ্ঞ ও ধর্ষণ নিয়ে। এই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
গতকাল রায়ের পর সোহাগপুর গ্রামে গেলে একাত্তরে স্বামীহারা নারীদের চোখে দেখা গেছে আনন্দাশ্রু। স্বজন ও গ্রামবাসী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।
একাত্তরে স্বামীহারা হাফিজা খাতুনের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তিনি বলেন, ‘এত বছর ধইরা আল্লাহর কাছে কাইন্দা কাইন্দা একটাই প্রার্থনা করছি, যারা আমাগর স্বামী-সন্তানগরে নির্বিচারে হত্যা করছে, তাগর বিচার যেন বাইচ্চা থাকতে দেইখা যাইবার পাই। আল্লাহ আমাগর প্রার্থনা কবুল করছে।’
আরেক বিধবা করফুলি বেগম বলেন, ‘এই কামারুজ্জামানের লাইগা ৪২ বছর ধইরা আমরা কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে রইছি। আজ তার উচিত বিচার অইল। বিচারে আমরা খুব খুশি অইছি।’ একাত্তরের ওই দিনে করফুলি বেগম স্বামীসহ পরিবারের আটজনকে হারিয়েছেন।
একাত্তরে স্বামীহারা হাসেন বানু, দিলমনি রাকসান আরও কয়েকজন একই রকম প্রতিক্রিয়া জানান।
একাত্তরের ওই দিনে শহীদ রহিম উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিন এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে আমার বাবাসহ ১৮৭ জনকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়। তাঁর ফাঁসির আদেশ হইছে। আমি এই রায়ে স্বস্তি অনুভব করছি।’
নালিতাবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শাহাবউদ্দিন জানান, রায়ে এলাকার বিধবাসহ মুক্তিযোদ্ধারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এই রায়ের মাধ্যমে বিধবারা তাঁদের স্বজনদের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারলেন।
মিষ্টি বিতরণ: কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি মিষ্টি বিতরণ করেছে। রায় শোনার পর পৌর শহরের শহীদ মিনার চত্বরে সমবেত মানুষ পরস্পরকে মিষ্টি মুখ করান।
শেরপুরে আনন্দ মিছিল, সমাবেশ: শেরপুর প্রতিনিধি জানান, রায় ঘোষণার পর শহরে আনন্দ মিছিল বের করে জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা জাসদ, জাগ্রত তরুণ প্রজন্মসহ বিভিন্ন সংগঠন। পরে পৌর টাউন হল মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সাংসদ মো. আতিউর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. লিয়াকত আলী, শেরপুর চেম্বারের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া প্রমুখ।
রায়ের পর শহরের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ আনন্দ প্রকাশ ও মিষ্টি বিতরণ করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বাড়ি শেরপুর জেলা সদরের বাজিতখিলা ইউনিয়নের কুমরি মুদিপাড়া গ্রামে।
ময়মনসিংহে আনন্দ মিছিল: ময়মনসিংহ অফিস জানায়, দুপুরে রায় ঘোষণার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ময়মনসিংহ জেলা ইউনিট কমান্ড, গণজাগরণ মঞ্চ ও জেলা আওয়ামী লীগ শহরে আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলে সমাজের বিভিন্ন স্তরের ও পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। শহরের ব্যস্ততম গাঙ্গিনারপার মোড় স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে।
হাফিজা খাতুনের বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের বেনুপাড়ায়। যা এখন বিধবাপল্লি নামে পরিচিত। একাত্তরের ২৫ জুলাই আলবদর, রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনী নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল সেখানে। বেনুপাড়ার সব পুরুষ মানুষকেই (১৮৭ জন) হত্যা করে পাড়াটিকে পরিণত করা হয়েছিল বিধবাপল্লিতে। সেদিন যে ৫৭ জন বিধবা হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে হাফিজাসহ ৩১ জন বেঁচে আছেন।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগের মধ্যে তৃতীয় অভিযোগ হলো সোহাগপুরে হত্যাযজ্ঞ ও ধর্ষণ নিয়ে। এই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
গতকাল রায়ের পর সোহাগপুর গ্রামে গেলে একাত্তরে স্বামীহারা নারীদের চোখে দেখা গেছে আনন্দাশ্রু। স্বজন ও গ্রামবাসী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।
একাত্তরে স্বামীহারা হাফিজা খাতুনের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তিনি বলেন, ‘এত বছর ধইরা আল্লাহর কাছে কাইন্দা কাইন্দা একটাই প্রার্থনা করছি, যারা আমাগর স্বামী-সন্তানগরে নির্বিচারে হত্যা করছে, তাগর বিচার যেন বাইচ্চা থাকতে দেইখা যাইবার পাই। আল্লাহ আমাগর প্রার্থনা কবুল করছে।’
আরেক বিধবা করফুলি বেগম বলেন, ‘এই কামারুজ্জামানের লাইগা ৪২ বছর ধইরা আমরা কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে রইছি। আজ তার উচিত বিচার অইল। বিচারে আমরা খুব খুশি অইছি।’ একাত্তরের ওই দিনে করফুলি বেগম স্বামীসহ পরিবারের আটজনকে হারিয়েছেন।
একাত্তরে স্বামীহারা হাসেন বানু, দিলমনি রাকসান আরও কয়েকজন একই রকম প্রতিক্রিয়া জানান।
একাত্তরের ওই দিনে শহীদ রহিম উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিন এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে আমার বাবাসহ ১৮৭ জনকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়। তাঁর ফাঁসির আদেশ হইছে। আমি এই রায়ে স্বস্তি অনুভব করছি।’
নালিতাবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শাহাবউদ্দিন জানান, রায়ে এলাকার বিধবাসহ মুক্তিযোদ্ধারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এই রায়ের মাধ্যমে বিধবারা তাঁদের স্বজনদের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারলেন।
মিষ্টি বিতরণ: কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি মিষ্টি বিতরণ করেছে। রায় শোনার পর পৌর শহরের শহীদ মিনার চত্বরে সমবেত মানুষ পরস্পরকে মিষ্টি মুখ করান।
শেরপুরে আনন্দ মিছিল, সমাবেশ: শেরপুর প্রতিনিধি জানান, রায় ঘোষণার পর শহরে আনন্দ মিছিল বের করে জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা জাসদ, জাগ্রত তরুণ প্রজন্মসহ বিভিন্ন সংগঠন। পরে পৌর টাউন হল মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সাংসদ মো. আতিউর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. লিয়াকত আলী, শেরপুর চেম্বারের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া প্রমুখ।
রায়ের পর শহরের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ আনন্দ প্রকাশ ও মিষ্টি বিতরণ করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বাড়ি শেরপুর জেলা সদরের বাজিতখিলা ইউনিয়নের কুমরি মুদিপাড়া গ্রামে।
ময়মনসিংহে আনন্দ মিছিল: ময়মনসিংহ অফিস জানায়, দুপুরে রায় ঘোষণার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ময়মনসিংহ জেলা ইউনিট কমান্ড, গণজাগরণ মঞ্চ ও জেলা আওয়ামী লীগ শহরে আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলে সমাজের বিভিন্ন স্তরের ও পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। শহরের ব্যস্ততম গাঙ্গিনারপার মোড় স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে।
No comments:
Post a Comment