Tuesday, December 25, 2012

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সাংবাদিক নির্মল সেন \


বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও বাম রাজনীতির পুরোধাব্যক্তিত্ব নির্মল সেন এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে তাঁকে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রের (আইসিইউ) এক নম্বর কেবিনে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁকে কৃত্রিম ব্যবস্থায় (লাইফ সাপোর্ট) বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। অসুস্থ হওয়ার আগে গ্রামের বাড়ি কোটালীপাড়ায় এক আলোচনা অনুষ্ঠানে নির্মল সেন বলেছেন, তাঁর মৃত্যুর পর রাষ্ট্র তাঁকে কোনো পুরস্কার দিলে তা গ্রহণ করা হবে না।
গত শনিবার বিকাল চারটার দিকে নির্মল সেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার দীঘিরপাড় গ্রামের বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। উন্নত চিকিত্সার জন্য তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নির্মল সেনের ভাইয়ের ছেলে কংকন সেন মুঠোফোনে জানান, বর্তমানে নির্মল সেন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ সাইদুল ইসলাম ও নিউরোলজি বিভাগের চিকিত্সক সিরাজুল হকের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে তাঁর রোগমুক্তির জন্য দোয়া কামনা করা হয়েছে।
এদিকে ঢাকায় রওনা হওয়ার আগে গ্রামের বাড়িতে বসে নির্মল সেন পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে জীবনের শেষ চার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। কংকন সেন ও গোপালগঞ্জের স্থানীয় সাংবাদিক মিজানুর রহমান জানান, নির্মল সেনের জীবনের শেষ ইচ্ছা নিজ বাড়িতে নারীদের জন্য একটি কলেজ নির্মাণ করা। মৃত্যুর পর তিনি কোনো মেডিকেল কলেজে দেহ দান করতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকতা পেশায় বিশেষ অবদানের জন্য তাঁর মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি কোনো পুরস্কার দেওয়া হয়, তা যেন গ্রহণ করা না হয়। বিশিষ্ট এই সাংবাদিকের আরেকটি ইচ্ছে হলো, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তাঁর মৃত্যুর সময় নির্মল সেনকে যে কথাগুলো বলে গিয়েছিলেন, তা বাম রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করা। কংকন সেন আরও বলেন, এই চার ইচ্ছা তিনি লিখে রেখে গেছেন।
নির্মল সেন ২০০৩ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত (ব্রেনস্ট্রোকে) সমস্যায় আক্রান্ত হন। এরপর তিনি দেশে ও বিদেশে চিকিত্সা নিয়েছেন। চার বছর ধরে এই সাংবাদিক গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দীঘিরপাড় গ্রামে নিজ বাড়িতে বাস করছিলেন।

No comments:

Post a Comment