রিপন একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করে। বাসায় বউ, ছোটবোন আর মা কে নিয়ে তার সংসার। আজ অফিসে বেতন হয়েছে। তাই মনটা একটু ভাল। বেতন যেদিন হয় সেদিন রিপনের মন ভালই থাকে। বাসাভাড়া দিতে হবে। বাড়িওয়ালা গতকালও এসেছিলো।
সাড়ে আটটা বাজে। আশেপাশের দোকানপাট সব বন্ধ। রাত আটটার পরে ধানমন্ডির এই রাস্তাটা কেমন নিরব হয়ে যায় এখন। দুয়েকটা রিকশা টুং টাং করে যাচ্ছে। রিপন অবশ্য প্রতিদিন হেটেই যায় রাস্তা টুকু। শুধু বেতনের দিনটা রিকশায় যায়।
রিপন এতক্ষণে রিকশাওয়ালার দিকে মনোযোগ দেয়। রোদে পোড়া শক্তসমর্থ ছেলেটা। চুপচাপ রিকশা চালাচ্ছে। কত কষ্ট করে টাকা কামাতে হয় এদের। এসব আনমনে ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ রিকশাওয়ালা রিকশা থামিয়ে দিলো। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতে করতেই ছেলেটা রিকশা থেকে নেমে রাস্তায় পরে থাকা একটি ছোট ইটের টুকরোর মত পেঁচানো কাগজ তুলে নিয়ে এল।
কাগজটা খুলতেই ছেলেটার চোখ যেন চকচক করে উঠল। রিপন তাকিয়ে দেখল কাগজের টুকরোয় পেঁচানো লকেট সহ স্বর্ণের একটা চেইন। বুঝতে পেল অসাবধানতায় কারো কাছ থেকে পরে গেছে হয়ত।
রিকশাওয়ালাঃ ভাই, এইডা তো দেহি সোনার চেইন। দেহেন তো ভাই আসল নাকি? আর কাগজটার মইধ্যে কি জানি লেহা।
রিপনঃ আমিতো স্বর্ণ চিনিনা, তবুও দেখি।
বলেই চেইনটা হাতে নিয়ে একটু দেখল রিপন। সোডিয়াম লাইটের আলোতে চকচক করছে জিনিসটা। একটু দাঁতের নিচে নিয়ে কামড় দিয়েও দেখল। না! আসলই তো মনে হচ্ছে।
এবার কাগজের টুকরোর দিকে নজর দিল ও। এলোমেলো হাতের লেখা“শাহালম ভাইকে দিয়া চল্লিশ হাজার টাকা নিবা।“ চেইনটা আসল না নকল তা নিয়ে রিপনের মনে যেটুকু সন্দেহ ছিল লেখাটা পড়ার পর তাও চলে গেল।
রিপনঃ মনে হচ্ছে তো আসল তবুও স্বর্ণের দোকানে নিয়ে যাচাই করতে হবে, এই নাও।
বলে রিকশাওয়ালার হাতে চেইনটা দিয়ে দিল।
রিপনঃ তুমি এটার দাম জান?
রিকশাওয়ালাঃ না ভাই কেমতে জানমু, আমরা কি আর সোনার জিনিস কিনতে পারি?
রিপনঃ দেখ, এটা সম্ভবত এক ভরি ওজনের। এটার দাম কিনতে গেলে পঞ্চাশ হাজার টাকা, কিন্তু তুমি যদি বিক্রি করতে যাও তাহলে ত্রিশ হাজার টাকার বেশি মনে হয় পাবে না।
রিকশাওয়ালাঃ আমিতো ভাই এইডা বেচতে পারুম না। গরিব মানুষ, স্বর্ণের দোকানে লইয়া গেলে আমারে চোর মনে কইরা মারতেও পারে। তারচে ভাই আপনে এইডা রাইখা দেন। আপনে শিক্ষিত মানুষ, আপনেরে কেউ সন্দেহ করবনা। আপনে এইডা বেইচা টেকা লইয়া লইয়েন। আর পারলে আমারে কিছু টেকা দিয়া দেন।
রিপনঃ আমার কাছে তো ত্রিশ হাজার টাকা হবে না। (বেতনের ২৫ হাজার টাকা ওর পকেটে। একটু চালাকি করে বলল) দশ হাজার টাকার মত হতে পারে, চলবে?
রিকশাওয়ালাঃ ভাই আপনে যা দেন তাই চলব। চলেন আপনেরে নামাইয়া দিয়া আসি।
রিপনের মনটা ফুরফুরে হয়ে গেল। যাক, কমপক্ষে বিশ হাজার টাকার মত লাভ হবে। রাপা প্লাজায় ওর পরিচিত একটা স্বর্ণের দোকান আছে। কাল সকাল সকাল গিয়ে একটা কিছু বানিয়ে বললেই হবে।
পরদিন সকাল ১১ টার দিকে অফিস থেকে একঘণ্টার ছুটি নিয়ে দোকানটায় গেল রিপন।
যথারীতি কুশল বিনিময়ের পর ও চেইনটা বের করে দিল। দোকানদার হাতে নিয়ে এবং সম্ভবত এসিডে চুবিয়ে দেখে যা বলল তাতে রিপনের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরল। এটা নাকি সম্পূর্ণ পিতলের, উপরে গোল্ড প্লেটেড করা।
রিপন আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেনা। পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে যাচ্ছে। এত সহজে এত বড় প্রতারণার শিকার হল! হায়রে মানুষ, হায় ঢাকা শহর!!
প্রিয় পাঠক, উপরের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য। আমরা যে কেউ রিপনের মত এই ধরনের অভিনব প্রতারণার শিকার হতে পারি।
তাই আগে থেকেই সাবধান থাকি, জেনে রাখি, সতর্ক থাকি এবং সুরক্ষিত থাকার চেষ্টা করি। পোস্টটি আপনার পরিচিত মানুষদের সাথে শেয়ার করুন। নিজে সতর্ক থাকুন, অন্যকে বিপদে পরা থেকে রক্ষা করুন।
সাড়ে আটটা বাজে। আশেপাশের দোকানপাট সব বন্ধ। রাত আটটার পরে ধানমন্ডির এই রাস্তাটা কেমন নিরব হয়ে যায় এখন। দুয়েকটা রিকশা টুং টাং করে যাচ্ছে। রিপন অবশ্য প্রতিদিন হেটেই যায় রাস্তা টুকু। শুধু বেতনের দিনটা রিকশায় যায়।
রিপন এতক্ষণে রিকশাওয়ালার দিকে মনোযোগ দেয়। রোদে পোড়া শক্তসমর্থ ছেলেটা। চুপচাপ রিকশা চালাচ্ছে। কত কষ্ট করে টাকা কামাতে হয় এদের। এসব আনমনে ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ রিকশাওয়ালা রিকশা থামিয়ে দিলো। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতে করতেই ছেলেটা রিকশা থেকে নেমে রাস্তায় পরে থাকা একটি ছোট ইটের টুকরোর মত পেঁচানো কাগজ তুলে নিয়ে এল।
কাগজটা খুলতেই ছেলেটার চোখ যেন চকচক করে উঠল। রিপন তাকিয়ে দেখল কাগজের টুকরোয় পেঁচানো লকেট সহ স্বর্ণের একটা চেইন। বুঝতে পেল অসাবধানতায় কারো কাছ থেকে পরে গেছে হয়ত।
রিকশাওয়ালাঃ ভাই, এইডা তো দেহি সোনার চেইন। দেহেন তো ভাই আসল নাকি? আর কাগজটার মইধ্যে কি জানি লেহা।
রিপনঃ আমিতো স্বর্ণ চিনিনা, তবুও দেখি।
বলেই চেইনটা হাতে নিয়ে একটু দেখল রিপন। সোডিয়াম লাইটের আলোতে চকচক করছে জিনিসটা। একটু দাঁতের নিচে নিয়ে কামড় দিয়েও দেখল। না! আসলই তো মনে হচ্ছে।
এবার কাগজের টুকরোর দিকে নজর দিল ও। এলোমেলো হাতের লেখা“শাহালম ভাইকে দিয়া চল্লিশ হাজার টাকা নিবা।“ চেইনটা আসল না নকল তা নিয়ে রিপনের মনে যেটুকু সন্দেহ ছিল লেখাটা পড়ার পর তাও চলে গেল।
রিপনঃ মনে হচ্ছে তো আসল তবুও স্বর্ণের দোকানে নিয়ে যাচাই করতে হবে, এই নাও।
বলে রিকশাওয়ালার হাতে চেইনটা দিয়ে দিল।
রিপনঃ তুমি এটার দাম জান?
রিকশাওয়ালাঃ না ভাই কেমতে জানমু, আমরা কি আর সোনার জিনিস কিনতে পারি?
রিপনঃ দেখ, এটা সম্ভবত এক ভরি ওজনের। এটার দাম কিনতে গেলে পঞ্চাশ হাজার টাকা, কিন্তু তুমি যদি বিক্রি করতে যাও তাহলে ত্রিশ হাজার টাকার বেশি মনে হয় পাবে না।
রিকশাওয়ালাঃ আমিতো ভাই এইডা বেচতে পারুম না। গরিব মানুষ, স্বর্ণের দোকানে লইয়া গেলে আমারে চোর মনে কইরা মারতেও পারে। তারচে ভাই আপনে এইডা রাইখা দেন। আপনে শিক্ষিত মানুষ, আপনেরে কেউ সন্দেহ করবনা। আপনে এইডা বেইচা টেকা লইয়া লইয়েন। আর পারলে আমারে কিছু টেকা দিয়া দেন।
রিপনঃ আমার কাছে তো ত্রিশ হাজার টাকা হবে না। (বেতনের ২৫ হাজার টাকা ওর পকেটে। একটু চালাকি করে বলল) দশ হাজার টাকার মত হতে পারে, চলবে?
রিকশাওয়ালাঃ ভাই আপনে যা দেন তাই চলব। চলেন আপনেরে নামাইয়া দিয়া আসি।
রিপনের মনটা ফুরফুরে হয়ে গেল। যাক, কমপক্ষে বিশ হাজার টাকার মত লাভ হবে। রাপা প্লাজায় ওর পরিচিত একটা স্বর্ণের দোকান আছে। কাল সকাল সকাল গিয়ে একটা কিছু বানিয়ে বললেই হবে।
পরদিন সকাল ১১ টার দিকে অফিস থেকে একঘণ্টার ছুটি নিয়ে দোকানটায় গেল রিপন।
যথারীতি কুশল বিনিময়ের পর ও চেইনটা বের করে দিল। দোকানদার হাতে নিয়ে এবং সম্ভবত এসিডে চুবিয়ে দেখে যা বলল তাতে রিপনের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরল। এটা নাকি সম্পূর্ণ পিতলের, উপরে গোল্ড প্লেটেড করা।
রিপন আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেনা। পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে যাচ্ছে। এত সহজে এত বড় প্রতারণার শিকার হল! হায়রে মানুষ, হায় ঢাকা শহর!!
প্রিয় পাঠক, উপরের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য। আমরা যে কেউ রিপনের মত এই ধরনের অভিনব প্রতারণার শিকার হতে পারি।
তাই আগে থেকেই সাবধান থাকি, জেনে রাখি, সতর্ক থাকি এবং সুরক্ষিত থাকার চেষ্টা করি। পোস্টটি আপনার পরিচিত মানুষদের সাথে শেয়ার করুন। নিজে সতর্ক থাকুন, অন্যকে বিপদে পরা থেকে রক্ষা করুন।
No comments:
Post a Comment